অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ করেছে ভারত।
Published : 31 Dec 2024, 05:32 PM
২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ‘মহাকাশ ডকিং’ পরীক্ষা।
সে পথেই আরও একধাপ এগিয়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) সফলভাবে তাদের স্পেস ডকিং মিশন শুরু করেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে সোমবার রাতে।
ইসরো জানিয়েছে, পিএসএলভি-সি৬০ রকেটটির প্রধান পেলোড হিসাবে রয়েছে দু’টি মহাকাশযান, স্পেডেক্স ১ (চেজ়ার) এবং ২ (টার্গেট)। এছাড়াও আছে ২৪ টি সেকেন্ডারি পেলোড। চেজার এবং টার্গেট প্রাথমিকভাবে একে অপরের থেকে ৫ কিমি দূরত্বে অবস্থান করবে।
এরপর আগামী ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে যান দুটিকে কাছাকাছি আনার চেষ্টা চালাবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে ৪৭০ কিমি উপরে মহাকাশে অক্ষাংশে একই বিন্দুতে দুই যানকে একত্রিত করা হবে।
মহাকাশে মহাকাশচারীদের ভ্রমণে ডকিংয়ের প্রয়োজন হয়। দুটি মহাকাশযানের মধ্যে ডকিং সম্পন্ন হলে মহাকাশচারীরা স্পেস স্টেশনে প্রবেশ করতে পারেন। সেই ডকিং প্রযুক্তিই পরীক্ষা করবে এই দুই মহাকাশযান।
কক্ষপথে চেজার ও টার্গেট ২৮ হাজার কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে প্রদক্ষিণ করবে। তবে ডকিংয়ের আগে তাদের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ০.০৩৬কিমিতে নামিয়ে আনতে হবে।
একই কক্ষপথে দুটি দ্রুতগতির মহাকাশযানকে যুক্ত করার এই প্রক্রিয়াই স্পেস ডকিং। বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ ও মহাকাশচারীদের স্থানান্তরের জন্য এ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। অভিযান সফল হলে মহাকাশ স্টেশন নির্মাণে বড় সাফল্য পাবে ভারত।
তাছাড়া, এর মাধ্যমে ভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে এই গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল প্রযুক্তি রপ্ত করা দেশের কাতারেও চলে আসবে। এর আগে কেবল রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন এ প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে।
ইসরো-র চেয়ারম্যান এসপি সোমনাথ বলেছেন, 'স্পেডেক্স'-এর সাফল্যের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে ভারতের আগামী দিনের একাধিক মহাকাশ পরিকল্পনা।
ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমে বলেন, চলতি বছরশেষে ইসরোর এই অভিযান 'ঐতিহাসিক'। কারণ, এর উদ্দেশ্য মহাকাশে দুটো মহাকাশযানকে একত্রিত করার জটিল পদ্ধতি আয়ত্ত করা।
চন্দ্রাভিযান, মহাকাশ থেকে নমুনা সংগ্রহের জন্য এ অভিযান যেমন অপরিহার্য, তেমনি মহাকাশ প্রযুক্তিতে শক্তিশালী দেশের তালিকায় স্থান করে নিতেও এ অভিযান ভারতের জন্য সহায়ক হবে, বলছেন বিশ্লেষকরা।