বিচারব্যবস্থা সংস্কারের বিতর্কিত পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলজুড়ে শুরু হওয়া ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে টালমাটাল হয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকার।
বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা বন্ধ করার জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে।
হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী তেল আবিব এবং জেরুজালেমের রাস্তায় নেমেছে। অনেকের হাতেই আছে নীল ও সাদা ইসরায়েলি পতাকা। বিয়ারশেবা, হাইফাসহ আরও অনেক জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে।
বিক্ষোভের কারণে ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকা ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছে। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানেও কর্মীরা প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেছে।
সোমবার সকালে জাতীয় টিভিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর। কিন্তু বিক্ষোভের কারণে তাও বন্ধ করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিক্ষোভের কারণে নেতানিয়াহু বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা স্থগিত করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে নেতানিাহু সরকারের কট্টর ডানপন্থি কোয়ালিশনের এক শরিক বলেছে, তিনি (নেতানিয়াহু) বিশৃঙ্খলার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না।
বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলি সমাজের প্রায় সব অংশেই ব্যাপক ক্ষোভ সঞ্চার করেছে। প্রভাবশালী সেনাবাহিনীও অসন্তুষ্ট হয়েছে।
ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টর-ডানপন্থি সরকার চাইছে বিচারক নিয়োগ কমিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করায়ত্ব করতে।
নেতানিয়াহু বলছেন, বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হলে আদালতকে এর এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া থেকে বিরত করা যাবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এ পদক্ষেপ নেতানিয়াহুর জন্য সহায়ক হবে। কারণ, তিনি দুর্নীতির দায়ে বিচারের মুখে আছেন।
বিবিসি’র সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের রাস্তায় রাস্তায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ঢল নেমেছে। ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের ভেতরেও বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদরা সরকারের বিচারব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ইসরায়েলিরা নেসেটের বাইরে জড়ো হচ্ছে।
বিশাল বিক্ষোভের মুখে নেতানিয়াহু টুইটারে এক পোস্টে সব বিক্ষোভকারীকেই দায়িত্বশীল আচরণ করা এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।