বর্তমানে দুই প্রতিবেশী দেশই বিস্তৃত সীমান্ত ঘিরে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনা প্রশমনের পথ খুঁজছে।
Published : 15 Jul 2023, 04:29 PM
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্করকে বলেছেন, বেইজিং ও নয়া দিল্লির মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করা প্রয়োজন।
শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনের ফাঁকে হওয়া বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এমন এক সময়ে ওয়াং ই-র এ মন্তব্য এল, যখন দুই প্রতিবেশী দেশই বিস্তৃত সীমান্ত ঘিরে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনা প্রশমনের পথ খুঁজছে।
এখন একে অপরের প্রতি সন্দেহের বদলে দরকার দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, শুক্রবারের বৈঠকে ওয়াং জয়শঙ্করকে এমনটাই বলেছেন বলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
ভারত ও চীনের মধ্যকার সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন হাজার ৮০০ কিলোমিটার; এর বেশিরভাগ অংশ ঠিকঠাক চিহ্নিতও করা হয়নি। সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ১৯৬২ সালে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু রক্তাক্ত যুদ্ধ হয়।
তবে ১৯৯০ এর দশক থেকে একের পর এক সীমান্ত চুক্তির ভেতর দিয়ে বেইজিং ও নয়া দিল্লি নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতি ঘটায়। চীন এখন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
২০২০ সালে এ পরিস্থিতি বদলে যায়, যখন লাদাখ সীমান্তে দুই পক্ষের সেনাদের হাতাহাতি ও লাঠি-রড নিয়ে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা ও ৪ চীনা সেনা নিহত হয়। নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে এরপর দুই পক্ষকেই সীমান্তের নিজ নিজ অংশে বিপুল সংখ্যক সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করতে দেখা যায়।
এরপর সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে ওই উত্তেজনা অনেকখানি থিতিয়ে এলেও নয়া দিল্লি এখনও সীমান্ত পরিস্থিতিকে ‘ভঙ্গুর ও বিপজ্জনক’ হিসেবেই দেখছে।
সীমান্ত ইস্যুতে দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য এমন একটি সমাধান খুঁজতে চীন ও ভারতের একই পথে কাজ করা দরকার, শুক্রবারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বলেছেন ওয়াং ই।
“একে অপরকে টেনে নামানো বা সন্দেহের দৃষ্টিতে না দেখে দুই পক্ষেরই উচিত একে অপরকে সহায়তা করা ও একসঙ্গে কিছু জিনিস অর্জন করা,” বলেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক।
নির্দিষ্ট কিছু ইস্যু সামগ্রিক সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করবে, এমনটা হতে দেওয়া উচিত নয় ভারত ও চীনের, বলেছেন তিনি।
শুক্রবারের এ বৈঠকে দুই পক্ষ সীমান্ত ইস্যুতে আগে থেকে নির্ধারিত একটি দিনে সামরিক কমান্ডারদের পরবর্তী দফার বৈঠক আয়োজনেও একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০২০ সাল থেকে নয়া দিল্লি চীনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারিও বাড়িয়েছে, এরই মধ্যে তারা টিকটকসহ তিনশর বেশি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। তারা চীনা প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ যাচাইয়ের মাত্রাও জোরদার করেছে।
ভারতের সাম্প্রতিক এসব বিধিনিষেধের ব্যাপারে ওয়াং ই ভারতে চীনা কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিবেশ যেন ন্যায্য, স্বচ্ছ ও বৈষম্যহীন থাকে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।