‘অপারেশন প্রস্প্যারিটি গার্ডিয়ান’ নামের এ সুরক্ষা ব্যবস্থায় যোগ দিচ্ছে বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সেশেলস এবং স্পেনও।
Published : 19 Dec 2023, 04:53 PM
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের সুরক্ষায় একাধিক দেশের জোট গঠন করে যৌথ টহলদারির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
লোহিত সাগরে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজগুলাতে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতিদের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা পর অস্টিন মঙ্গলবার বাহরাইন সফরের সময় এ ঘোষণা দিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সদরদপ্তর বাহরাইনে অবস্থিত। অস্টিন সেখানে সফরকালে নতুন টহল জোট ‘অপারেশন প্রস্প্যারিটি গার্ডিয়ান’ -এ অংশ নেওয়া দেশগুলোর নাম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বহুদেশীয় এ নিরাপত্তা উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সেশেলস ও স্পেন যোগ দিচ্ছে। এই গ্রুপ লোহিত সাগরের দক্ষিণাঞ্চল এবং এডেন উপসাগরীয় অঞ্চলে যৌথ টহল অভিযান পরিচালনা করবে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন বলেন, “এটি একটি আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ, যা সম্মিলিত পদক্ষেপের দাবি রাখে। তাই আজ আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন বহুজাতিক নিরাপত্তা উদ্যোগ ‘অপারেশন প্রস্প্যারিটি গার্ডিয়ান’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি।’
৪০ টিরও বেশি দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অস্টিন অন্যান্য দেশকেও এক্ষেত্রে অবদান রাখার আহ্বান জানান। হুতিদের বেপরোয়া হামলারও নিন্দা জানান তিনি।
অস্টিন বলেন, “আমরা সবাই আজ এখানে। কারণ, অনেক দেশই গুরুত্বপূর্ণ সাগরপথগুলোকে নিরাপদ রাখার আমাদের এই অভিন্ন চেষ্টায় সরাসরি অবদান রাখতে পারে।”
তবে অস্টিন এমন আহ্বান জানালেও যৌথ টহলদারির বিষয়টি নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
তেমন একটি প্রশ্ন হল, সম্প্রতি লোহিত সাগরে হামলার মুখে পড়া বাণিজ্যিক জাহাজকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ভূপাতিত করাসহ আক্রান্ত জাহাজকে দ্রুত সাহায্য করতে যে ভূমিকা নিয়েছে, তেমন কাজ অন্য দেশগুলো করতে ইচ্ছুক হবে কিনা।
তাছাড়া, লোহিতসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ইতোমধেই একটি টাস্ক ফোর্স আছে। যার কারণে গুরুত্বপূর্ণ সাগরপথগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জোরাল উপস্থিতিও আছে। এখন ‘অপারেশন প্রস্প্যারিটি গার্ডিয়ান’ গঠনের পর কতগুলো দেশ সেখানে অতিরিক্ত জাহাজ কিংবা টহল বিমান পাঠাবে সেটিও স্পষ্ট নয়।
ইদানিং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুতিদের হামলা বেড়ে গেছে। হুতিরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন দিচ্ছে। লোহিত সাগরে ইসরায়েল অভিমুখে যাওয়া জাহাজগুলোকে হামলার নিশানা করার হুমকি দিয়েছে তারা।
এর প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বড় বড় শিপিং কোম্পানিগুলো এখন একে একে লোহিত সাগর রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নতুন নিরাপত্তা উদ্যোগের ঘোষণা আসার আগে দিয়েও হুতিরা জানায়, তারা সোমবার লোহিত সাগর এলাকায় দুটো পণ্যবাহী জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।