মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধজাহাজ কার্নি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে সহায়তা করেছে এবং তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
Published : 04 Dec 2023, 09:03 AM
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লোহিত সাগরের দক্ষিণাংশে আন্তর্জাতিক জলসীমায় তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা হয়েছে। ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী দাবি করেছে, তারা ওই এলাকায় দু’টি ইসরায়েলি জলযানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, হুতিদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়ার পর মার্কিন যুদ্ধজাহাজ কার্নি বিপদ সঙ্কেতে সাড়া দিয়েছে এবং সহযোগিতা করেছে।
ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, তাদের নৌবাহিনী সশস্ত্র ড্রোন ও নৌ-ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ‘ইউনিটি এক্সপ্লোরার’ ও ‘নাম্বার নাইন’ নামের দু’টি ইসরায়েলি জাহাজে হামলা চালিয়েছে।
সতর্ক সঙ্কেত দেওয়ার পর ইসরায়েলি জাহাজগুলো তা অগ্রাহ্য করায় সেগুলোকে লক্ষ্যস্থল করা হয় বলে হুতিদের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুতি মুখপাত্র বলেন, ইয়েমেনি জনগণের দাবিতে সাড়া দিয়ে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। এটি মুসলিম জাতিগুলোর পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান।
মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধজাহাজ কার্নি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে সহায়তা করেছে এবং তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
তবে মার্কিন যুদ্ধজাহাজটিকে লক্ষ্যস্থল করা হয়েছিল কি না, তা পরিষ্কার হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
হুতিদের হামলাগুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতি হুমকি বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন বাহিনী।
হামলাগুলো ইয়েমেনের হুতিরা করলেও ইরানের সমর্থনেই তারা এ সক্ষমতা অর্জন করেছে, তারা এমনটি বিশ্বাস করে বলে জানিয়েছে মার্কিন বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র তার আন্তর্জাতিক মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে পুরোপুরি সমন্বয় করে ‘উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা বিবেচনা করবে’ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা।
আক্রান্ত জাহাজ দু’টির সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি।
তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “একটি জাহাজ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর সেটি ডুবে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে আছে। অন্য জাহাজটির সামান্য ক্ষতি হয়েছে।”
বাহামার পতাকাবাহী মালবাহী ইউনিটি এক্সপ্লোরার জাহাজ লন্ডনভিত্তিক ডাও শিপিং লিমিটেডের পরিচালনাধীন। জাহাজটির মালিক ইউনিটি এক্সপ্লোরার লিমিটেড। জাহাজটির ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
নাম্বার নাইন শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন নাম্বার নাইন একটি কনটেইনারবাহী জাহাজ। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বানহার্ড শেল্টি শিপম্যানেজমেন্ট (বিএসএম) নাম্বার নাইনের পরিচালনা কোম্পানি।
রয়টার্সের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিএসএম বলেছে, ঘটনার সময় নাম্বার নাইন সুয়েজ বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। হামলায় জাহাজের কেউ আঘাত পেয়েছে বা জাহাজ থেকে কোনো দূষণ ছড়িয়েছে, এমন খবর পাওয়া যায়নি। বাব আল-মানদাব প্রণালী পার হওয়ার সময় একটি ক্ষেপণাস্ত্র জাহাজটিতে আঘাত হানে।
হামলায় জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটি গন্তব্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় বেশ কয়েকটি জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এটি সর্বশেষ ঘটনা।
আরও পড়ুন: