ভারতে নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন নিয়ে বিতর্ক

আগামী ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2023, 04:03 PM
Updated : 23 May 2023, 04:03 PM

ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন নিয়ে তুমুল বিতর্কে জড়িয়েছেন ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বিরোধীদলের নেতারা।

বিবিসি জানায়, আগামী ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন।

যাতে জোর আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল। তাদের যুক্তি, ভবন উদ্বোধনের জন্য সরকারের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ না জানানো ‘সাংবিধানিক অসঙ্গতি’।

উদ্বোধনের তারিখ নিয়েও তাদের আপত্তি রয়েছে। কারণ, ২৮ মে হিন্দু জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রবক্তা বিনায়ক দামোদর সাভারকরের জন্মদিন।

ভারতের বিরোধীদলগুলো সাভারকরকে একজন বিতর্কিত চরিত্র বলে গণ্য করে। অন্যদিকে, বিজেপির কাছে তিনি নায়ক।

বিরোধী দলের নেতারা বলেন, পার্লামেন্টের নতুন ভবন উদ্বোধনের জন্য এমন একটি দিন বেছে নেওয়া ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীকে ‘অপমানের’ সামিল।

মহাত্মা গান্ধী হত্যার পেছনে সাভারকর জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কংগ্রেস এমপি জয়রাম রমেশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘এমন একজনের জন্মদিনে পার্লামেন্টের নতুন ভবন উদ্বোধন করা হবে যিনি জীবনভর তীব্রভাবে মহাত্মা গান্ধীর বিরোধিতা করে গেছেন।”

ওদিকে, বিজেপি তাদের পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলেছে, নতুন ভবনটি ভারতের গর্বের প্রতীক।

ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। চারতলা ওই ভবনটির নকশা করেছেন এইচসিপি ডিজাইন। পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং নির্মাণকাজ করেছে টাটা প্রোজেক্টস।

নতুন ভবনে আসন ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এবং এটি নির্মাণে প্রায় ৯৭০ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি বর্তমান পার্লামেন্ট ভবনটিও ব্যবহার করা হবে।

গত সপ্তাহে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ভবনের উদ্বোধনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই বেশ কয়েকটি বিরোধী দল রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মুকে এই অনুষ্ঠানের বাইরে রাখা নিয়ে সমলোচনা করে আসছে। ভারতে রাষ্ট্রপতির পদ আলঙ্করিক হলেও তিনিই কার্যত রাষ্ট্রের প্রধান।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মুকে দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করানো উচিত।

একই কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘‘ভারতের পার্লামন্টে হলো ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইনসভা এবং সাংবিধানিকভাবে ভারতের প্রেসিডেন্ট হলেন দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। তিনিই কেবল সরকার, বিরোধীদল এবং প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব করেন।

‘‘নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন তার হাতে হলে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি [সরকারের] অঙ্গীকারের প্রতীক হতো।”

নতুন ভবন উদ্বোধনের তারিখ নিয়ে সমালোচনার জবাবে বিজেপি মুখপাত্র গৌরভ ভাটিয়া বলেন, এটা কংগ্রের পার্টির ‘নিজেদের বড় দেখানার চেষ্টা’ ছাড়া আর কিছু না।

বলেন, রাহুল গান্ধী ‘শুভ সময়ে একটি ‍অশুভ লক্ষণ, ‍যিনি ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটিকে স্বাগত জানাতে পারেননি।”

শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেস থেকে নতুন পার্লামন্টে ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে যখন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় তখনও কংগ্রেসসহ বেশ কয়েকটি বিরোধীদল উপস্থিত ছিল না।