কনসারভেটিভ পার্টিকে এর প্রতিষ্ঠাকালীন নীতিতে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় জয়ী তিনি।
Published : 02 Nov 2024, 09:32 PM
যুক্তরাজ্যের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল কনসারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন কেমি বাডেনক। এর মাধ্যমে ব্রিটেনের একটি বড় রাজনৈতিক দল প্রথমবারের মতো একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে দলীয় প্রধান হিসেবে বরণ করে নিল।
কনসারভেটিভ পার্টিকে এর প্রতিষ্ঠাকালীন নীতিতে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শনিবার দলটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় জয়ী হন বাডেনক।
দলটির প্রধান হিসেবে বাডেনক (৪৪) সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। জুলাইয়ে ব্রিটেনের জাতীয় নির্বাচনে বিপর্যয়কর ফলের পর মনোবল হারানো কনসারভেটিভ পার্টিকে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, দলটি ‘বাম দিক থেকে শাসন করে’ রাজনৈতিক কেন্দ্রের দিকে ঝুকেছিল।
রয়টার্স বলছে, বাডেনক সম্ভবত কনসারভেটিভ পার্টির ডানপন্থি নীতিগুলোতে জোর দিয়ে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ হ্রাস এবং যাকে তিনি বলেছেন ‘প্রাতিষ্ঠানিক বামপন্থি চিন্তাধারা’ তার বিরোধিতা করবেন। তিনি বলেছেন, এটি বাক স্বাধীনতা, অবাধ উদ্যোগ ও মুক্ত বাজারের নীতিগুলিকে রক্ষা করা সময়।
কনসারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচনে কয়েক মাস ধরে প্রতিযোগিতা চলছিল। শুরুতে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও চারজন ঝরে গিয়ে প্রতিযোগিতা দুই প্রার্থীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে দলের ৫৭ শতাশং সদস্যের ভোট পেয়ে জয়ী হন বাডেনক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক পান ৪৩ শতাংশ ভোট।
বাডেনক ২০১৬ সালের মাঝামাঝির পর থেকে কনসারভেটিভ পার্টির পঞ্চম নেতা হলেন।
তার জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন লেবার দলীয় প্রধান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। তিনি বলেছেন, “একটি ওয়েস্টমিনস্টার পার্টির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নেতা আমাদের দেশের জন্য গর্বিত হওয়ার একটি মুহূর্ত।”
বাডেনক নিজে প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি তার জাতিগত পরিচয়ে জোর দিতে পছন্দ করেন না।
রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথমদিকে কনসারভেটিভ পার্টির সম্মেলন চলাকালে দলটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী নেতা হলে কেমন লাগবে প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন, “আমি এমন একজন যে চায় না আমাদের ত্বকের রঙ আমাদের চুলের বা আমাদের চোখের রঙের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাক।”
চলতি বছরের প্রথমদিকে বন গেথিং ওয়েলস লেবার পার্টির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নেতা নির্বাচিত হয়ে ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু তার নেতৃত্বে অনাস্থা জানিয়ে মন্ত্রীদের মধ্যে পদত্যাগের ঢেউ শুরু হলে মাত্র চার মাস পরেই তিনি পদত্যাগ করেন।
জুলাইয়ের জাতীয় নির্বাচনে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ পার্টি পার্লামেন্টের ৬৫০ আসনের মধ্যে মাত্র ১২১টিতে জয় পেয়ে বিপর্যয়ের শিকার হয়। অথচ এর আগের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলটি ৩৬৫ আসনে জয় পেয়েছিল। নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন সুনাক।