ভারতের উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর নিহতদের লাশ প্রাথমিকভাবে বাহানগা বাজারের যে সরকারি স্কুলটিতে রাখা হয়েছিল প্রশাসনের উদ্যোগে সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাজ্যটির বালেশ্বর জেলার বাহানগা বাজার স্টেশনে তিনটি ট্রেনের দুর্ঘটনায় ২৮৮ জন নিহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্টেশন সংলগ্ন ওই স্কুলটিকে অস্থায়ী মর্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। একদিন পর মৃতদেহগুলোতে পচন ধরতে শুরু করার পর লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে সরিয়ে নেওয়া হয়।
স্কুল চত্বরে দুর্গন্ধ থাকায় সেটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি স্যানিটাইজও করা হয়েছিল। কিন্তু স্কুল খোলার পর স্কুল ভবনটিতে ক্লাশ করার জন্য শিক্ষার্থীরা আর ফিরে আসেনি। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের সেখানে পাঠাতে আগ্রহী ছিলেন না।
স্কুলটিকে মর্গ হিসেবে ব্যবহারে সময় অভিভাবকরা সেখানে যা কিছু দেখেছেন তাতে সন্তানদের আর সেখানে পাঠাতে তাদের মন সায় দেয়নি বলে জানিয়েছেন অনেকে।
এই পরিস্থিতিতে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি রাজ্য সরকারের কাছে স্কুলের ৬৫ বছরের পুরনো ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন গড়ে দেওয়ার আবেদন জানায়। আবেদনে কমিটি জানায়, স্কুল ভবনটি আর নিরাপদ নেই এবং ট্রেন দুর্ঘটনার পর লাশ রাখায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত বোধ করছেন।
“শিশু শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে আছে,” বাহানগা হাইস্কুলের হেডমিস্ট্রেস প্রমিলা সোয়াইন এমনটি বলেছেন বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের দেওয়া উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে।
শিশুদের ভয় কাটাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান ও কিছু আচার অনুসরণ করার পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে স্কুলের কিছু জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী ও এনসিসি ক্যাডেট ট্রেন দুর্ঘটনায় পর উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বালেশ্বরের জেলা প্রশাসক বৃহস্পতিবার স্কুলটি পরিদর্শন করেন এবং এর ম্যানেজিং কমিটি, হেডমিস্ট্রেস ও অন্যান্য কর্মী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি জানান, শিশুরা যেন ক্লাসে আসতে ভয় না পায় সেই জন্য তারা চান স্কুলের পুরনো ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।
এরপর শুক্রবার থেকে পুরনো ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।