বিক্ষোভের মুখে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করছে চীন

সাংহাই এবং গুয়াংঝুর কয়েক ডজন জেলা এবং বিভিন্ন নগরীতে কোভিড শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকার মধ্যেও এলাকাগুলো লকডাউন মুক্ত করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2022, 12:41 PM
Updated : 1 Dec 2022, 12:41 PM

গণবিক্ষোভের মুখে কিছু কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করে দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও কঠোর কোভিড-নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে চীন।

চীনের সাংহাই এবং গুয়াংঝুর কয়েক ডজন জেলা এবং বিভিন্ন নগরীতে কোভিড শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যেও বৃহস্পতিবার ওইসব এলাকা লকডাউন মুক্ত করা হয়েছে।

বিবিসি জানায়, গুয়াংঝুর মতো প্রধান নগরীগুলোতে বুধবার হঠাৎ করেই কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়। গুয়াংঝুতে কঠোর কোভিড নীতি-বিরোধী সহিংস বিক্ষোভ এবং পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার কয়েকঘন্টা পর এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

রাজধানী বেইজিংয়ের একটি কমিউনিটিতেও মৃদু উপসর্গ থাকা কোভিড রোগীদেরকে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে আগে এমনকী একজন কোভিড আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও পুরো ভবন এবং কমিউনিটিকেই লকডাউন করে ফেলা হত।

সাংহাই এবং চংকিং এর মতো অন্যান্য প্রধান নগরীতেও কিছু কিছু কোভিড বিধিনিষিধ শিথিল করা হয়েছে।

চীনের মহামারী বিষয়ক সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ও উপপ্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভাইরাসের রোগসৃষ্টির ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, অনেক মানুষই টিকা নিয়ে ফেলেছে এবং ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে। তার এমন মন্তব্যের পর কোভিড বিধিনিষেধ শিথিলের এই উদ্যোগ এল।

কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগেই জিরো-কোভিড নীতি চালিয়ে যাওয়া দেশের জন্য দরকার বলে যে বার্তা দিয়েছিল এখনকার এই অবস্থান তার ঠিক বিপরীত।

কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিস্তার রোধে গত কয়েক মাস ধরে চীন সরকার দেশজুড়ে ‘শূন্য কোভিড নীতি’ বাস্তবায়ন করছে।

দীর্ঘদিন ধরে কঠোর লকডাউন চলার কারণে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যার ফলে সম্প্রতি নানা এলাকায় লোকজনকে সড়কে নেমে লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে।

গত শনিবার থেকে ‍বিক্ষোভ ক্রমেই জোরদার হয়েছে। অনেকেই ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

উরুমছিতে সম্প্রতি একটি ভবনে আগুন লেগে ১০ জন নিহতের ঘটনা বিক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। মানুষজন ভবনে আটকা পড়ার জন্য কোভিড বিধিনিষেধকে দায়ী করা হচ্ছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে মানুষের অসন্তোষকে বরাবরই আমলে নেয়নি চীন সরকার। শূন্য কোভিড নীতি নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সম্প্রতি তিনি এ নীতি থেকে সরে না দাঁড়ানোর অঙ্গীকারও করেছিলেন।