হাইতির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ‘লড়াইয়ের’ শপথ অপরাধী দলের নেতার

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সহিংসতার কারণে প্রায় তিন লাখ হাইতিবাসী নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2024, 09:14 AM
Updated : 2 March 2024, 09:14 AM

হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নিজের চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির অপরাধী জোটের নেতা জিমি চেরিজিয়ার, যিনি বারবিকিউ নামেও পরিচিত।

শুক্রবার হাইতির রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে চেরিজিয়ার পরিবারগুলোকে ‘ক্ষতি এড়াতে’ তাদের শিশুদের স্কুলে না পাঠানোর জন্য বলেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, হাইতির রাজধানীর কয়েকটি অংশে ব্যাপক গোলাগুলি ও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে দেখা গেছে। যেখানে লড়াই চলতে তার কাছাকাছি এলাকার বহু বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। রাস্তায় রাস্তায় পোড়া বাস, যানবাহন পড়ে আছে আর জলন্ত ব্যারিকেডগুলো থেকে ঘন ধূসর ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে।

“যতদিন প্রয়োজন ততদিন লড়াই চলবে। এরিয়েল হেনরির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা। ক্ষতি এড়াতে শিশুদের বাড়িতেই রাখবেন,” বলেছেন চেরিজিয়ার।

চেরিজিয়ার একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি হাইতির অপরাধী দলগুলোর একটি জোটের প্রধান। ২০২২ সালে তিনি দলবল নিয়ে দেশটির বৃহত্তম তেল টার্মিনাল অবরোধ করে দেশজুড়ে অচলাবস্থা তৈরি করেছিলেন। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে।

শুক্রবার রাতে খবর আসে, সশস্ত্র ব্যক্তিরা দেশটির প্রধান কন্টেইনার বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছে আর অপরাধী দলগুলো রাজধানীর আরও থানায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। তবে রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে খুন হওয়ার দুই পুলিশ সদস্যের লাশ দেখা গেছে। দেশটির এক পুলিশ ইউনিয়নের নেতা রয়টার্সকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার যে চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে এই দুইজন তাদের অন্যতম।

আরেক পুলিশ ইউনিয়নের সদস্যরা দেশটির পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে নিহত পুলিশ কর্মকর্তাদের লাশ উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছিল।

এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী হেনরির দপ্তর বলেছে, সশস্ত্র দস্যুদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তারা ক্ষুব্ধ।

নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে সংঘাতের সমাধান করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।

গত সপ্তাহে হেনরি কেনিয়া সফরে যাওয়ার পর হাইতিতে সহিংসতা শুরু হয়। হাইতিতে অপরাধী দলগুলোর সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের অনুমোদিত মিশনের অংশ হিসেবে দেশটিতে এক হাজার পুলিশ কর্মকর্তা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে কেনিয়া। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে।

২০২১ সালে দেশের বাইরে থেকে আসা একদল ভাড়াটে সেনা হাইতির তৎকালীন প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেন। তারপর দেশটির ক্ষমতায় আসেন হেনরি। কিন্তু ওই সময় থেকেই হাইতিজুড়ে ব্যাপক সহিংতা ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এসব সহিংসতার কারণে প্রায় তিন লাখ হাইতিবাসী নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।