গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথম সমাবেশে ইমরানের ভাষণ, মৃত্যুভয় জয়ের আহ্বান

রাওয়ালপিণ্ডির সমাবেশে ফিরেই সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণে মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2022, 03:50 PM
Updated : 27 Nov 2022, 03:50 PM

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এসেছেন। রাওয়ালপিন্ডিতে এক সমাবেশে বিপুল সংখ্যক সমর্থকের উপস্থিতিতে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। আহ্বান জানিয়েছেন মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে বাঁচার।

বিবিসি জানায়, শনিবার ইমরান রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশে উপস্থিত হলে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকরা খুশিতে চিৎকার করে ওঠেন। যদিও ইমরান পূর্ব নির্ধারিত সময়ের বেশ কয়েকঘণ্টা পর সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন।

পিটিআই ঘোষিত লং মার্চের অংশ হিসেবে শনিবার এ সমাবেশ হয়। আগাম নির্বাচনের দাবিতে অক্টোবর থেকে লংমার্চ শুরু করেছে দলটি। এর মধ্যেই প্রায় তিন সপ্তাহ আগে দলীয় সমাবেশ চলাকালে বন্দুক হামলায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ইমরান।

এ মাসের শুরুতে ওয়াজিরাবাদে ইমরানের উপর হওয়া ওই হামলায় একজন নিহত এবং পিটআই এর আরও বেশ কয়েকজন নেতা আহত হন।

ইমরানের ডান পায়ে গুলি লেগেছিল এবং তার অস্ত্রোপচার করতে হয়। এর পর থেকে এতদিন তিনি কোনও সমাবেশে অংশ নেননি।

শনিবার আবার সমাবেশে জনস্মুখে উপস্থিত হয়ে ইমরান বলেন, ‘তিনজন অপরাধী’ আবারও তার উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর অপেক্ষায় আছে।

সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘মৃত্যু ভয় একটি গোটা জাতিকে দাসে পরিণত করে। মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে বাঁচুন।”

ইমরান ‍আরও বলেন, ‘‘জাতির সামনে এখন দুটি পথ খোলা। একটি আশীর্বাদ ও মহানুভবতার; অন্যটি অপমান ও ধ্বংসের। এখন জাতিকে যেকোনো একটি পথ বেছে নিতে হবে।’’

গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে এক অনাস্থা ভোটে পতন হয় ইমরানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। এর পর থেকেই তিনি আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে সভা-সমাবেশ ও লংমার্চ করছেন।

ইমরানের নেতৃত্বে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এরপর যত দিন গড়িয়েছে এই কর্মসূচিতে জনসমাগম ততই বেড়েছে।

গত ৩ নভেম্বর পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চ করছিলেন। এ সময় তার ওপর হামলা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে ইমরানের এক সমর্থক প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এক হামলাকারীকে বন্দুকসহ ধরে ফেলেন। পরে সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন, ইমরানকে হত্যা করাই তার উদ্দেশ ছিল এবং তিনি নিজেই ওই হামলা পরিকল্পনা করেছেন।

ইমরান অবশ্য তার উপর হামলা পরিকল্পনার দায় পাকিস্তানের বর্তমান সরকার ওপর চাপিয়েছেন। সরকারি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

শনিবার ইমরানের সমাবেশে উপস্থিত এক নারী বিবিসি-কে বলেছেন, ‘‘আমি এখানে এমন একজন নেতার জন্য এসেছি যিনি আমাদের সমর্থন করছেন।তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। তিনি দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে আজ এখানে। তিনি আমাদের একটি লক্ষ্য দিয়েছেন।”