চীন সফরে যাবেন তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মা

তাইওয়ানের সাবেক বা বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে মা ইং-জউই প্রথম চীন সফরে যাচ্ছেন।

রয়টার্স
Published : 19 March 2023, 05:54 PM
Updated : 19 March 2023, 05:54 PM

এ মাসে চীন সফরে যাবেন তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মা ইং-জউ। রোববার তার কার্যালয় থেকে একথা জানানো হয়েছে।

১৯৪৯ সালে যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর রিপাবলিক অব চায়না সরকার তাইওয়ান দ্বীপে পালিয়ে যায়। তারপর তাইওয়ানের সাবেক বা বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে মা ইং-জউই হতে চলেছেন প্রথম কেউ, যিনি চীন সফরে যাচ্ছেন।

এমন একটি সময়ে মা চীন সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন যে সময়ে বেইজিং ও তাইপের মধ্যে উত্তজনা তুঙ্গে রয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তাইপে সফর ঘিরে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে যুদ্ধ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। যে উত্তেজনার পারদ এখনও নামেনি।  

তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ মনে করে চীন। যারা একদিন পুনরায় একত্রিত হবে। এজন্য প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের হুমকিও দিয়ে রেখেছে চীন।

তাইওয়ানের কারণেই চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক ‘ওয়ান-চায়না পলিসি’ বা এক-চীন নীতির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।চীন চায় বাকি বিশ্ব তাদের এক-চীন নীতি অনুসরণ করুক।

তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক নাম এখনও ‘দ্য রিপাবলিক অব চায়না’।

মা তাইওয়ানের বর্তমান বিরোধী দল কুওমিনটাং (কেএমটি) এর একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য।এর আগে তিনি ২০১৫ সালের শেষ দিকে সিঙ্গাপুরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকের মাত্র কয়েকদিন আগেই ভোটে জিতে তাইওয়ানের ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।

মা’র কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তিনি আগামী ২৭ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল চীন সফর করবেন। চীনের নানজিং, উহান, চাংসা, চংকিং এবং সাংহাইয়ে যাবেন তিনি।

ওইসব নগরীতে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও চীন-জাপান যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করবেন।

সেইসঙ্গে মা ওইসব স্থানেও যাবেন যেগুলোর সঙ্গে ১৯১১ সালে গণবিপ্লবের মাধ্যমে চীনা সম্রাটকে উৎখাত করে বর্তমান রিপাবলিক অব চায়নার জন্মের সম্পর্ক রয়েছে।

মা’র কার্যালয় থেকে তার চীন সফরে যাওয়ার খবর দেওয়া হলেও তিনি চীনের কোনও কর্মকর্তা বা প্রেসিডন্ট শি’র সঙ্গে বৈঠক করবেন কিনা সে বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।

কুওমিনটাং (কেএমটি) ঐতিহ্যগতভাবেই চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে। যদিও দলটি দৃঢ়ভাবে নিজেরা চীনপন্থি নয় বলে দাবি করে।

তবে তাদের সেই দাবি আর কাজের মধ্যে মিল নেই। বরং, উভয় দেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিল করার পর চীনের সঙ্গে কেএমটি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ বেড়েছে।

গত মাসে কেএমটির উপ প্রধান অ্যান্ড্রু সিয়া বেইজিং যান এবং সেখানে কমিউনিস্ট পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াং হুনিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)বিরোধীদল কেএমটিকে আক্রমণ করতে সিয়ার চীন সফরের কথা উল্লেখ করে বলেছে, তারা বেইজিংয়ের অতি কাছের এবং তাইওয়ানকে বিক্রি করে দিতে চায়।

অন্যদিকে, কেএমটি বলেছে, চীনের সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে।

সাইকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে বিশ্বাস করে চীন। তাই বার বার তার আলোচনার আহ্বান ফিরিয়ে দিয়েছে।

সাই বলেছেন, তাইওয়ানের ভাগ্য শুধুমাত্র তাইওয়ানের জনগণই নির্ধারণ করার অধিকার রাখে। ‍তাই তিনি চীনের সার্বভৌমত্বের দবি প্রত্যাখ্যান করেন।