বর্তমানে যে এনক্রিপশন ব্যবস্থা মানুষের ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট তথ্যসহ নানা ব্যক্তিগত বার্তার সুরক্ষা দেয় কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সামনে সেগুলো স্রেফ নস্যি বলে প্রমাণিত হতে পারে।
Published : 16 Aug 2023, 05:40 PM
‘কোয়ান্টাম অ্যাপোক্যালিপ্স’-এর সম্ভাব্য প্রস্তুতি হিসেবে ক্রোম ব্রাউজারে নতুন আপডেট এনেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল।
বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েক বছর ধরেই সতর্ক করেছেন, বর্তমানে যে এনক্রিপশন ব্যবস্থা মানুষের ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট তথ্যসহ নানা ব্যক্তিগত বার্তার সুরক্ষা দেয় কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেটিকে টাপকে যেতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রযুক্তি এখনও তাত্ত্বিক পর্যায়ে থাকলেও এর সমর্থকদের দাবি, এর ফলে প্রচলিত ‘ক্লাসিক’ কম্পিউটারের কার্যকারিতা নাটকীয়ভাবে হারিয়ে যেতে পারে।
ঔষধ গবেষণা ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো খাতে এই প্রযুক্তি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির বেলায় এটি ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আোর ঝুঁকি রয়েছে।
নিরাপত্তা প্রযুক্তিগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্ভর করে এমন গাণিতিক বিষয়ের ওপর যেগুলো প্রচলিত কম্পিউটারের মাধ্যমে সমাধান করা কঠিন। তবে, ভবিষতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের আবির্ভাবে এই ধরনের সমস্যা নিমিষেই সমাধানের পাশাপাশি যে কোনো ধরনের ডেটায় প্রবেশ করতে পারার ঝুঁকি থাকবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’।
এখন ক্রোম ব্রাউজারে এমনই কিছু বিষয় দেখা যাচ্ছে যার মানে হচ্ছে, গুগল ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসাবে ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো নতুন প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ‘সিস্টেম ভাঙার’ প্রচেষ্টার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করতে পারে এগুলো।
এর জন্য ‘X25519Kyber768’ নামে পরিচিত এক প্রযুক্তিও এতে সমন্বিত করছে গুগল। এর দীর্ঘ নাম আসলে দুটি ভিন্ন ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যালগরিদমের হাইব্রিড ব্যবস্থা। এগুলো সমন্বিত করার মানে দাঁড়ায়, বিদ্যমান নিরাপদ অ্যালগরিদমের পাশাপাশি কোয়ান্টাম কম্পিউটারের বিপরীতেও ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষিত থাকবে।
গুগলের বিস্তৃত এক কর্মযজ্ঞের অংশ এই আপডেট। এর লক্ষ্য হচ্ছে, ‘ওয়েব ব্রাউজারকে কোয়ান্টাম প্রতিরোধী ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা’।
এক ব্লগ পোস্টে এইসব বদল আনার ঘোষণা দিয়েছেন ক্রোমের নিরাপত্তা ব্যবস্থার টেকনিকাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডেভন ও’ব্রায়েন। তিনি আরও যোগ করেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটার চালু হতে আরও কয়েক দশক সময় লাগবে। তবে, এই প্রযুক্তির আগমনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এখন থেকেই ডেটা সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
“অনুমান বলছে, প্রচলিত আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে পারে, এমন কোয়ান্টাম কম্পিউটার আসতে এখনও পাঁচ, ১০ এমনকি ৫০ বছরও সময় লেগে যেতে পারে।” --বলেন তিনি।
“এখন থেকেই সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা কেন গুরুত্বপূর্ণ? এর জবাব হল, ‘হার্ভেস্ট নাও’ ও ‘ডিক্রিপ্ট লেটার’ নামে পরিচিত সুনির্দিষ্ট কয়েকটি আক্রমণের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোগ্রাফির ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এগুলো ডেটা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ক্রিপ্টো বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডেটা ডেক্রিপ্ট করে থাকে।”