রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ: প্রযুক্তির পরিবর্তন যিনি করে গেছেন আলিঙ্গন

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার প্রথম ইমেইলটি যখন পাঠিয়েছিলেন, তখনও ইন্টারনেটের ভাবনা ছিল আঁতুর ঘরে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2022, 08:32 AM
Updated : 9 Sept 2022, 08:32 AM

ব্রিটিশ সিংহাসনের অধিষ্ঠাত্রী হিসেবে সাতটি দশক রাজপরিবারের ঐতিহ্য আর কৌলিণ্যের বাতাবরণকে সুরক্ষিত রেখেছিলেন তিনি, তবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে ‘সেকেলে’ বলার সুযোগ বেশি নেই।

৯৬ বছরের জীবনে তার চোখের সামনেই এ পৃথিবীর নানা পরিবর্তন ঘটে গেছে, মানুষের জীবন আর জীবন সম্পর্কে ধারণাকেই পাল্টে দিয়েছে প্রযুক্তি। নতুন সেসব ধারণা আর উদ্ভাবনী প্রযুক্তিকেও তিনি গ্রহণ করে নিয়েছেন সাদরে।

ইন্টারনেটের ভাবনা যখন আঁতুর ঘরে, তখনই নিজের প্রথম ইমেইলটি পাঠিয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, ফটো ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম থেকে শুরু করে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টুইটারেও তার উপস্থিতি ছিল।

রানির অভিষেক মানুষ দেখেছে টেলিভিশনে

১৯৫৩ সালে দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটিশ সিংহাসনে অভিষিক্ত হওয়ার সময় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছিল সে অনুষ্ঠান, যা ছিল ব্রিটিশ রাজ পরিবারের জন্য প্রথম। রাজ পরিবারের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, সে সময় কেবল যুক্তরাজ্যেই দুই কোটি ৭০ লাখ মানুষ টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি দেখেছিলেন।

রানির প্রথম ইমেইল

সত্তরের দশকের প্রথমভাগেই আরপানেট (পরে যা ইন্টারনেটে পরিণত হয়) সংযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ডের টেলিযোগাযোগ গবেষণা সংস্থা ‘রয়্যাল সিগনালস অ্যান্ড রেডার এসটাবলিশমেন্ট’। আর সেই আরপানেট সংযোগ ব্যবহার করেই ১৯৭৬ সালে নিজের প্রথম ইমেইল পাঠিয়েছিলেন রানি।

সে সময়ে রানিকে ইমেইল বার্তা পাঠাতে সহযোগিতা করেছিলেন পিটার কার্স্টেইন। রানির ইউজার নেইম ‘এইচএমই২ (HME2)’ বানিয়ে দিয়েছিলেন ওই ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী; যার মানে ছিল “হার ম্যাজেস্টি, এলিজাবেথ টু”।

থ্রিডি প্রযুক্তিতে বড়দিনের শুভেচ্ছা বার্তা

প্রতিবছরই বড়দিন উপলক্ষে দেশের নাগরিকদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতে হত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে। ২০১২ সালে সেই শুভেচ্ছা বার্তা রেকর্ড করার সময় ব্যতিক্রমী কিছু করার ইচ্ছে হয়েছিল রানির।

সেবার বড়দিনের রানির শুভেচ্ছা বার্তা থ্রিডি প্রযুক্তিতে রেকর্ড করা হয়। পুরো বিষয়টি রানির খুবই ভালো লেগেছিল বলে বিবিসিকে জানিয়েছিলেন বাকিংহ্যাম প্যালেসের এক মুখপাত্র।

২০১৪ সালে প্রথম টুইট

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার প্রথম টুইটটি করেন ২০১৪ সালে। লন্ডন সায়েন্স মিউজিয়ামের এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রানি সেই টুইটে লিখেছিলেন, “আজ সায়েন্স মিউজিয়ামের ইনফর্মেশন এইজ প্রদর্শনীর উদ্বোধন আনন্দ দিয়েছে। আমি আশা করছি, মানুষ এটা উপভোগ করবে।”

গুগল সদরদপ্তরে রানি

২০০৮ সালেই প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সদরদপ্তরে বেড়াতে গিয়েছিলেন রানি এলিজাবেথ। সেই ভ্রমণের ভিডিও নিজেদের ইউটিউব পেইজে শেয়ার করেছিল ব্রিটিশ রাজ পরিবার।

ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের তথ্য বলছে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ আর প্রিন্স ফিলিপকে এক শিশুর হেসে লুটোপুটি খাওয়ার ভাইরাল ভিডিও দেখিয়েছিলেন গুগল কর্মীরা। সে ভিডিও দেখে নাকি নিজেদের হাসি ধরে রাখতে পারেননি তারা।

উপস্থিতি ইনস্টাগ্রামেও

রানি এলিজাবেথ ইনস্টাগ্রামে রাজ পরিবারের অ্যাকাউন্টে তার প্রথম পোস্টটি দিয়েছিলেন ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। সেবারও লন্ডন সায়েন্স মিউজিয়ামে ছিলেন তিনি।

প্রিন্স অ্যালবার্টের উদ্দেশ্যে ডিজিটাল কম্পিউটার ধারণার প্রবর্তক চার্লস ব্যাবেজের লেখা একটি চিঠির ছবি পোস্ট করে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী খাতে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন রানি।