প্রাণী হত্যার অভিযোগে ইলন মাস্কের কোম্পানি, তদন্ত শুরু

নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গতি বাড়াতে ইলন মাস্ক বাড়তি চাপ দেওয়ার কারণেই পরীক্ষাগারে নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছে প্রাণীগুলো।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2022, 02:33 PM
Updated : 7 Dec 2022, 02:33 PM

এক সপ্তাহ আগেই ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, ছয় মাসের মধ্যেই মানুষের ওপর ব্রেইন চিপ প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করবে তার কোম্পানি। এর মধ্যে খবর রটেছে, নিউরালিংকের পরীক্ষাগারে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়। 

ফেডারেল তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাণী কল্যাণ আইন’ লঙ্ঘনের বিষয়টি মূল বিবেচ্য বলে এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

নিউরালিংকের কর্মীরাই অভিযোগ তুলেছেন, ব্রেইন চিপ প্রযুক্তির কার্যক্ষমতা প্রমাণের জন্য তাড়াহুড়ো করেছে মাস্কের কোম্পানি; এর ফলে ২০১৮ সাল থেকে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত দেড় হাজার প্রাণী।

২০১৬ সালে যাত্রা শুরু হওয়া নিউরালিংকের সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ইলন মাস্ক। কোম্পানির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ স্থাপনের প্রযুক্তি নির্মাণ। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জন্মান্ধের দৃষ্টি ফেরানো এবং পক্ষাঘাতগ্রস্তকে হাঁটার সক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে পারবে এমন প্রতিস্থাপনযোগ্য কম্পিউটার চিপের কথা বলেছেন তিনি। 

রয়টার্স জানিয়েছে, তদন্তের নেত্বত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের ইন্সপেক্টর জেনারেলস অফিস; তদন্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে প্রাণী কল্যাণ আইন। পরীক্ষাগারে কোনো প্রাণীর ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর সময় কোন কোন বিষয় গ্রহণযোগ্য আর কোনটি গ্রহণযোগ্য নয় তার বিস্তারিত আছে ওই আইনে। 

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গতি বাড়াতে মাস্ক বাড়তি চাপ দেওয়ার কারণেই পরীক্ষাগারে নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছে প্রাণীগুলো। কিছু ক্ষেত্রে প্রস্তুতি ছাড়াই, আর কিছু ক্ষেত্রে একই পরীক্ষা বারবার চালাতে বাধ্য হয়েছেন গবেষকরা, যাতে প্রয়োজন ছাড়াই মারা গেছে প্রাণীগুলো।

রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে নিউরালিংকের পরীক্ষাগারে প্রাণ গেছে দেড় হাজার প্রাণীর। এর মধ্যে ২৮০টি ভেড়া, শূকর আর ম্যাকাক বানর আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

তবে, তথ্য সংরক্ষণের বেলায় ‘ভুল’ করেছিল নিউরালিংক; অর্থাৎ, প্রাণহাণীর সঠিক সংখ্যা এর চেয়ে বেশিও হতে পারে।

নিউরালিংকের কার্যক্রমের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফিজিশিয়ান কমিটি ফর রেসপন্সিবল মেডিসিন’ বলেছে, ইলন মাস্কের কোম্পানি ব্রেইন-মেশিন ইন্টারফেইসের নামে ম্যাকাক বানরগুলোর ‘অঙ্গচ্ছেদ করে বিকৃত’ করছে। 

ফেব্রুয়ারি মাসের এক ব্লগ পোস্টে নিজেদের প্রাণী কল্যাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দাবি করে সমালোচনা মোকাবেলার চেষ্টা করেছিল নিউরালিংক।  

অন্যদিকে, ৩০ নভেম্বরের এক আয়োজনে ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মানুষের ওপর ব্রেইন চিপ প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখতে চায় তার কোম্পানি। তবে, এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’র অনুমোদন লাগবে।

প্রাণী কল্যাণ আইন লঙ্ঘণের অভিযোগ তদন্ত প্রসঙ্গে নিউরালিংকের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পায়নি রয়টার্স।