কোভিড মিথ্যাচারের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলল মাস্কের টুইটার

এক সপ্তাহ আগেই কোভিড নীতিমালা লঙ্ঘনকারী টুইটের ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ইলন মাস্কের অধীনে যাওয়া টুইটার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 09:50 AM
Updated : 30 Nov 2022, 09:50 AM

কোভিড মহামারী নিয়ে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যত তুলে নিয়েছে টুইটার; কোভিড নীতিমালার প্রয়োগ বন্ধ করে দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি।

কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২৩ নভেম্বর থেকেই কোভিড নীতিমালা লঙ্ঘনকারী টুইটের ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সম্প্রতি ইলন মাস্কের অধীনে যাওয়া টুইটার।

অথচ সেপ্টেম্বর মাসেই কোভিড মহামারী নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে ১১ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার খবর জানিয়েছিল প্ল্যাটফর্মটি।

বিবিসি জানিয়েছে, অন্য যে কোনো বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার বিষয়ক নীতিমালা এখনও কার্যকর আছে টুইটারে।

বিশেষ কোভিড নীতিমালায় ‘ফাইভ-স্ট্রাইক সিস্টেম’ অনুসরণ করত টুইটার। ‘বড় ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হয়,’ কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে কোভিড মহামারী প্রসঙ্গে এমন কোনো ‘ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর’ কনটেন্ট পোস্ট করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ারও ব্যবস্থা ছিল।

প্রথমবার এমন কোনো কনটেন্ট শেয়ারের বেলায় সাধারণত কোনো পদক্ষেপ নিত না টুইটার। কিন্তু বারবার নীতিমালা ভঙ্গ করলে অল্প কয়েক ঘণ্টার জন্য অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে পাঁচবারের বেশি একই অপরাধ করলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিত প্ল্যাটফর্মটি।

টুইটারের কোভিড মহামারী নিয়ে মিথ্যাচার মোকাবেলার কৌশল কখনোই ত্রুটিহীন ছিল না; কিন্তু এই নীতিমালার অধীনে ২০২০ সাল থেকে টুইটার যে হাজারো ভুয়া তথ্য প্রচারকারীর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে – সে বিষয়টি স্বস্তিদায়ক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ লিডস স্কুল অফ মেডিসিনের ড. স্টিফেন গ্রিফিন।

টুইটারে ফিরছেন মহামারী নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারকারীরা

কদিন আগেই টুইটারে নিষিদ্ধ হওয়া ব্যক্তিদের জন্য ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণার প্রস্তাব তুলেছিলেন চিফ টুইট ইলন মাস্ক। বিবিসি জানিয়েছে, কোভিড নিয়ে মিথ্যাচারবিষয়ক নীতিমালার প্রয়োগ বন্ধ করে দেওয়ায় ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে নিষিদ্ধ হওয়া অ্যাকাউন্টগুলো ফেরা শুরু করেছে প্ল্যাটফর্মটিতে।

ইতোমধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য মারজোরি টেইলর গ্রিনের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করেছে টুইটার। কোভিড মহামারী নিয়ে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগে জানুয়ারি মাসে প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

নিষিদ্ধ হওয়া অ্যাকাউন্টগুলো ফেরত আনা প্রসঙ্গে বর্তমান টুইটার ব্যবহারকারীদের মতামত জানতে চেয়ে জরিপ চালু করেছিলেন ইলন মাস্ক। তাতে ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছিল কয়েক লাখ। জরিপ শেষে মাস্ক টুইট করেছিলেন, “সাধারণ মানুষ তাদের মত দিয়েছে… সাধারণ ক্ষমা শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহেই।”

চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব দেওয়ার সময় থেকেই মাস্ক প্ল্যাটফর্মটিকে ‘বাকস্বাধীনতার খোলা মাঠ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। তবে, এখন পর্যন্ত তার বাকস্বাধীনতার খোলা মাঠে জনসাধারণের মনে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বিতর্কিত চরিত্রগুলোই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

সে তালিকায় আছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প; ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা উস্কে দিয়ে একযোগে প্রথমসারির সকল সামাজিক মাধ্যম থেকে একযোগে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি; দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছিলেন পাঁচ মার্কিন নাগরিক।