৩ দিনব্যাপী ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা উদ্বোধন

মেলায় ৫২টি প্যাভিলিয়ন এবং ৭৭টি স্টলে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2023, 01:43 PM
Updated : 26 Jan 2023, 01:43 PM

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হল ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা।

তিন দিনব্যাপী এই মেলায় ৫২টি প্যাভিলিয়ন এবং ৭৭টি স্টলে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই মেলা উদ্বোধন হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে সশরীরে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ডিজিটাল বাটন চেপে মেলার দ্বার খোলেন।

এই মেলায় প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক ক্যাবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ), মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রদর্শন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, জেডটিই, এবং বিভিন্ন মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করবে। দেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সেবা উপস্থাপন করবে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নিবন্ধন করে বিনা টিকেটে মেলা পরিদর্শন করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। নিবন্ধন করা যাচ্ছে www.digitalbangladeshmela.org.bd ওয়েবসাইটে।

মেলায় টেলিকম অপারেটরগুলো তাদের ভয়েস, ইন্টারনেট ও মূল্য সংযোজিত সেবা দর্শনার্থীদের দেখাবে। প্রতিষ্ঠানগুলো ফাইভ জি লাইভ প্রদর্শন করা হবে বলেও জানানো হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের সরকারি লক্ষ্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ আসলে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী জাতি গঠনেরই রূপকল্প। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাস্তবায়িত উদ্যোগগুলোর সম্প্রসারণ এবং নতুন নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জন করতে চায় সরকার।”

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে তিনটি সুষ্পষ্ট লক্ষ্য অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলা, উদ্ভাবনী জাতি গঠন এবং অন্তর্ভূক্তিমুলক ডিজিটাল সমাজ বিনির্মাণ।”

এসব লক্ষ্য অর্জিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ হবে প্রযুক্তিনির্ভর মেধাভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ, বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক বিনির্মাণের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা এবং পরিবর্তিত বিশ্বে নতুন সভ্যতার রূপান্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন ইত্যাদি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি আজ সুদৃঢ় হয়েছে।

তিনি বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা দেওয়ার পর তা নিয়ে হাসাহাসি হয়েছিল। কিন্তু আমরা আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ দিয়েছি।”

মেলা আয়োজন নিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানব সম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’র লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং চীনা মোবাইল তৈরির প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লিফ হু উপস্থিত ছিলেন।

বাটনে বিভ্রাট

ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করতে গিয়ে যান্ত্রিক বিভ্রাটে পড়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার পর দীপু মনি ডায়াসের সামনে রাখা সাজানো ডিজিটাল বাটনে চাপ দিয়ে উদ্বোধনের জন্য এগিয়ে যান। কিন্তু বাটনে চাপ দেওয়া হলেও এটি কাজ করছিল না। এ সময় তাকে বেশ কয়েকবার বাটনটি চাপতে দেখা গেছে।

এরপর অনুষ্ঠানের সুচি ভেঙে সভাপতির বক্তব্য দিতে ওঠেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রায় ২০ মিনিট বক্তব্য দেন মোস্তাফা জব্বার। এই সময়ের মধ্যে দায়িত্বশীল ব্যক্তি বাটনটি কার্যকর করে তোলেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী নির্ধারিত বাটনটি চেপে মেলার উদ্বোধন করেন।