স্টারলাইনারকে মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে প্রস্তুত নাসা

তিন বছর ধরে প্রস্তুতি নেওয়ার পরও দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষামূলক যাত্রায় মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই এটা ব্যর্থ হয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2024, 08:09 AM
Updated : 26 Jan 2024, 08:09 AM

বোয়িংয়ের তৈরি মহাকাশযান ‘সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার’-এর বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটি সমাধান করে একে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

বুধবার সংস্থাটি ঘোষণা দিয়েছে, মহাকাশযানটির প্রথম মানববাহী পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ঘটতে পারে এপ্রিলের মধ্যেই।

বোয়িংয়ের তৈরি এ ক্যাপসুলটিকে নাসা মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে চায় বলে উঠে এসেছে প্রযুক্তি সাইট ডিজিটালট্রেন্ডসের প্রতিবেদনে, যা স্পেসএক্স-এর পরীক্ষিত ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুলের দ্বিতীয় বিকল্প হবে।

তবে এ যাত্রার প্রেক্ষাপট এতটা মসৃণ ছিল না। ২০১৯ সালে নানা সমস্যার মুখে পড়ে স্টারলাইনারের এক পরীক্ষামূলক যাত্রা ব্যর্থ হয়েছিল। পরবর্তীতে, তিন বছর খুবই সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়ার পর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আইএসএস-এ পৌঁছাতে সক্ষম হয় মহাকাশযানটি।

এর পর থেকে বেশ কিছু কারিগরি ত্রুটির কারণে এর প্রথম মানববাহী মিশন পিছিয়েছে নাসা। তবে, এবার হয়ত মহাকাশযানটি পুনরায় উৎক্ষেপণের জন্য ‘প্রায় প্রস্তুত’।

নাসা বলেছে, এ মাসের শুরুতে একটি সফল ‘ড্রপ টেস্ট’ চালানোর পর যানটির ‘প্যারাস্যুট সিস্টেমে’ কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন ওই পরীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে চূড়ান্ত বিশ্লেষণ করছে নাসা ও বোয়িং।

আর উৎক্ষেপণ চালানোর আগেই এর সকল সিস্টেমের সার্টিফিকেশন শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠান দুটি। আর এ ক্যাপসুলের মাধ্যমে মহাকাশ স্টেশনে সম্ভবত দুইজন নভোচারীকে পাঠানো হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ডিজিটালট্রেন্ডস।

এদিকে, যানটির প্রায় চার হাজার তিনশ ফুট টেপ সরিয়ে ফেলেছে এর নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং, যেখানে এর আগের পরীক্ষায় দেখা গেছে, কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পরিবেশে টেপগুলো পুড়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।

নাসা বলেছে, তাদের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো এলাকার ‘হোয়াইট স্যান্ডস মিসাইল’ ঘাটিতে মিশনের দুই নভোচারীকে দিয়ে দুই দিনের জন্য স্টারলাইনারের ‘আনডক-টু-ল্যান্ডিং’ ড্রেস রিহার্সাল করিয়েছে।

এতোসব অগ্রগতির পরও, ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ‘ইউএলএ (ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স)’র তৈরি অ্যাটলাস ৫ রকেটে স্টারলাইনার ক্যাপসুলটি উৎক্ষেপণের আগে অনেক কাজ বাকি আছে।

এর মধ্যে রয়েছে ‘ক্রু ফ্লাইট টেস্ট’ সার্টিফিকেশনের বিষয়টিও, যে পরীক্ষার মাধ্যমে মিশনের বিভিন্ন ধাপ পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ ছাড়া, লঞ্চপ্যাডে নেওয়ার আগে অ্যাটলাস ৫ রকেট ও স্টারলাইনারে বিভিন্ন সরঞ্জাম যুক্ত করাও বাকি।

মিশনটি বাস্তবায়িত হলে স্টারলাইনারে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পথে যাত্রা করতে দেখা যাবে এর আগে দুইবার মহাকাশ অভিযানে যাওয়া নাসার নভোচারী বুচ উইলমোর ও নারী নভোচারী হিসেবে সবচেয়ে বেশি স্পেসওয়াকের কৃতিত্ব অর্জন করা সুনিতা উইলিয়ামসকে। আর মহাকাশ স্টেশনের অন্যান্য নভোচারীর সঙ্গে দুই সপ্তাহ কাজ করবেন তারা।

আর মিশন শেষ হলে ওই একই ক্যাপসুলে চড়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের কোনো এলাকায় তারা প্যারাস্যুটের মাধ্যমে অবতরণ করবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ডিজিটালট্রেন্ডস।