পরবর্তী প্রজন্মের যাত্রীবাহী প্লেন তৈরির প্রকল্প জাপানের

হাইড্রোজেন জ্বালানি পোড়ানোর সময় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হবে না— এমন এক চমকপ্রদ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে এ প্রকল্পে, যার মাধ্যমে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্যস্থির করেছে জাপান।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2024, 09:01 AM
Updated : 29 March 2024, 09:01 AM

নিজেদের সর্বশেষ প্রচেষ্টা বাতিল হওয়ার বছরখানেক পর সম্প্রতি পরবর্তী প্রজন্মের যাত্রীবাহী বিমান প্রকল্প প্রকাশ্যে আনার ঘোষণা দিয়েছে জাপান।

এভিয়েশন খাতের জন্য নতুন কর্মকৌশল নিয়ে জাপানের রাজনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি কমিটির এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর বুধবার এ পরিকল্পনার ঘোষণা এল।

এটি একটি সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প, যেখানে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহারের পরামর্শ রয়েছে। আর এ প্রকল্পে খরচ হবে প্রায় পাঁচ লাখ কোটি ইয়েন বা তিন হাজার তিনশ কোটি ডলার— অজ্ঞাত এক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে জাপানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

“জাপানের এয়ারক্রাফট শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী হিসাবে আমাদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ নয়,” বৈঠক শুরুর আগে গণমাধ্যমের সামনে কমিটিকে বলেন জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কাজুচিকা ইওয়াতা।

“হাইড্রোজেনভিত্তিক কার্বন-নিরপেক্ষ প্রযুক্তির বিভিন্ন নতুন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে একটি নেতৃস্থানীয় অবস্থান নেওয়ার লক্ষ্য রাখি আমরা”। পাশাপাশি, ন্যারো বডি প্লেন নির্মাণের লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধার আহ্বানও জানান ইওয়াতা।

জাপানের ব্যবসায়িক দৈনিক ‘নিক্কেই’ ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির লক্ষ্য, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্লেনটিকে একেবারে প্রস্তুত করা।

অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পর, নিজেদের প্রথম এয়ারলাইনার তৈরির জন্য নতুন করে চাপ এসেছে জাপানে। এরই মধ্যে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বহুল প্রচারিত এক প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছিল ‘মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ’।

ওই প্রকল্পে স্বল্প থেকে মাঝারি দূরত্বের ফ্লাইটের জন্য একটি ‘টুইন-ইঞ্জিন’ প্লেন তৈরিতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ১০ বছর পর তা বাতিল হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে প্লেনের প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও ডেলিভারি তারিখ বারবার পেছানোর কথা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

গত মাসে সিঙ্গাপুরে নিজেদের প্রথম অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি যাত্রীবাহী জেটের প্রথম ঝলক দেখিয়েছে চীন। এর লক্ষ্য ছিল, ইউরোপের এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িংয়ের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানো।

১৯৬২ সালে ‘ওয়াইএস১১ টার্বোপ্রপ’ নামে নিজেদের সর্বশেষ বাণিজ্যিক বিমান চালু করেছিল জাপান। তবে, এর এক দশক পরই তা বন্ধ হয়ে যায়।

হাইড্রোজেন জ্বালানি পোড়ানোর সময় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হবে না— এমন এক চমকপ্রদ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে এ প্রকল্পে, যার মাধ্যমে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্যস্থির করেছে জাপান।

তবে, নির্ভরযোগ্য সরবরাহ চেইন ছাড়া নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে উৎপাদিত ‘গ্রিন’ হাইড্রোজেন ব্যবহার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

অন্যান্য হাইড্রোজেন জ্বালানীর মধ্যে আছে ‘গ্রে’ হাইড্রোজেন, যা গ্রিনহাউস গ্যাস তৈরি করা কয়লা, পেট্রোল বা গ্যাস থেকে তৈরি হয়। এ ছাড়া, ‘ব্লু’ হাইড্রোজেন জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এলেও এর কার্বন নির্গমন ধারণ ও সংরক্ষণ করা যায়।