লঞ্চপ্যাডে বসেই ঘূর্ণিঝড় নিকোল পার করেছে নাসার আর্টেমিস ১ মিশনের মহাকাশযান। ঝড় শেষে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন স্পেসক্র্যাফটে কোনো ক্ষতির তথ্য এখনও পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চপ্যাড ৩৯বি-তে উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় আছে নাসার আর্টেমিস ১ মিশনের রকেট ও ক্যাপসুল। এর মধ্যেই ১০ নভেম্বর ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় নিকোল।
স্পেস ডটকম জানিয়েছে, উপকূলে পৌঁছানোর পর ১ মাত্রার হারিকেন থেকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের রূপ নিয়েছিল নিকোল। ঝড়ের পুরোটা সময় লঞ্চপ্যাডেই ছিল রকেট ও মহাকাশযান।
ঝড় শেষে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নাসার প্রধান কার্যালয়ের ‘এক্সপ্লোরেশন সিস্টেমস ডেভেলপমেন্ট মিশন ডিরেক্টরেট’-এ সহযোগী পরিচালক জিম ফ্রি টুইট করে বলেন, “আমাদের কর্মীরা লঞ্চপ্যাডের ক্যামেরার মাধ্যমে রকেট, স্পেসক্র্যাফট এবং গ্রাউন্ড সিস্টেমের অবস্থা বিশ্লেষণ করে দেখছে।”
ঝড়ো বাতাস থেকে রকেটকে ঢেকে রাখার আবরণে ছোট কিছু ক্ষতি ছাড়া গুরুতর কিছু ভিডিওতে নজরে আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে নাসার প্রকৌশলীরা শিগগিরই সশরীরে মহাকাশযানের অবস্থা যাচাই করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন জিম ফ্রি।
স্পেস ডটকম জানিয়েছে, ঝড়ের সময়ে ৬০ ফুট উচ্চতায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮২ মাইল বা ১৩২ কিলোমিটার।
এসএলএস রকেটের নকশা করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৮৫ মাইল বা ১৩৭ কিলোমিটার গতির ঝড়ো বাতাস সহ্য করার মত করে। ফলে ঝড়ের মধ্যে এ রকেটের উৎরে যাওয়ারই কথা।
পাঁচ দশকের ব্যবধানে নাসার মানব নভোচারীদের চাঁদে ফেরানোর প্রকল্প ‘আর্টেমিস’-এর প্রথম ধাপ হচ্ছে আর্টেমিস ১। এই মিশনের মাধ্যমে নতুন এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন স্পেক্র্যাফটের কার্যক্ষমতা ও নির্ভযোগ্যতা যাচাই করে দেখার চেষ্টা করছে নাসা।
কিন্তু সেপ্টেম্বর মাস থেকে একাধিকবার আর্টেমিস ১ উৎক্ষেপণের সময়সূচি নির্ধারণ করেও কারিগারি জটিলতা ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে প্রতিবার শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে নাসা।
কারিগরি ত্রুটি সারিয়ে আর্টেমিস ১ লঞ্চপ্যাডে ফেরত পাঠিয়ে নিরাপদ উৎক্ষেপণের উপযোগী আবহাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন নাসার কর্মীরা। ঘূর্ণিঝড় নিকোলের কারণে তা আরও পিছিয়ে এখন উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য সময়সূচি হিসেবে ১৬ নভেম্বরের কথা বলছেন তারা। তবে এ বিষয়ে খুঁটিনাটি জানা যাবে ১৩ নভেম্বর।