ভুয়া খবর তৈরির অভিযোগে চীনে গ্রেপ্তার চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারী

বাকস্বাধীনতা সমর্থক ও চীন সরকারের সমালোচক অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঝুঁকি এই ঘটনার কারণে বেড়ে যাওয়ায় এর বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2023, 01:32 PM
Updated : 10 May 2023, 01:32 PM

চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগে উত্তর চীনের গানসু প্রদেশ থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। 

এই পদক্ষেপ সম্ভবত চীনের নতুন এআই বিরোধী নির্দেশিকার অধীনে পরিচালিত প্রথম গ্রেপ্তারগুলোর একটি বলে প্রতিবেদনে বলেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। আর অন্যান্য বিধিনিষেধের পাশাপাশি বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেবাকে ‘ভূয়া তথ্য’ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এতে।

‘হং’ ছদ্মনামে পরিচিত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনাওয়ালা ‘ভুয়া তথ্যের’ সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির অভিযোগের বিষয়টি চীনের সংবাদপত্র সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২৫ এপ্রিল প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জানার পর চীনা কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, একই গল্পে বিভিন্ন ঘটনাস্থলের কথা জুড়ে দিয়ে বাইদু মালিকানাধীন ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম ‘বাইজিয়াহাও’-এর ২০টি অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়।

গানসু কর্তৃপক্ষ এইসব প্রতিবেদন খুঁজে পেয়েছে হংয়ের মাধ্যমে পরিচালিত এক স্বতন্ত্র কোম্পানির কাছ থেকে। আর এই কোম্পানি বেশ কিছু ব্লগ-ধাঁচের সাইটও পরিচালনা করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ভার্জ।

বিবৃতিতে দেশটির স্থানীয় পুলিশের দাবি, ‘ডুপ্লিকেট কনটেন্ট ফিল্টার’ ব্যবস্থা এড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যমান বিভিন্ন ভাইরাল সংবাদ প্রতিবেদন পুনরায় লিখতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন হং। আর তার বন্ধুরা ইন্টারনেট ট্রাফিকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের উপায় দেখিয়ে দেওয়ার পর হং সেগুলো অনলাইনে পোস্ট করেন।

এইসব ভুয়া প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলার আগে ১৫ হাজারেরও বেশিবার দেখেছেন লোকজন।  চ্যাটজিপিটি’র প্রবেশাধিকার বন্ধ করা কিছু সংখ্যক দেশের একটি হলো চীন। তবে, দেশটির নাগরিকরা ভিপিএন সংযোগ ব্যবহারের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পারেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ভার্জ।

হংয়ের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে ‘ঝগড়া তৈরি ও ঝামেলা উস্কে দেওয়ার’ অভিযোগ উঠেছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলেছে, ভুল তথ্য তৈরি বা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যেতে পারে। আর একে ‘জনগণের শৃঙ্খলা মেনে না চলা বা সর্বজনীন জায়গায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করা’ হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা যায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ভার্জ।

এই অপরাধের খুঁটিনাটি এখনও অস্পষ্ট। ফলে, এটি বাকস্বাধীনতা সমর্থক ও চীন সরকারের সমালোচক অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেওয়ায় এর বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। আর এতে অভিযুক্তদের কারাদণ্ড হতে পারে পাঁচ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত।