টেক জায়ান্ট অ্যাপল ও কোম্পানির প্রধান নির্বাহী টিম কুকের উদ্দেশ্যে আক্রমণাত্মক সুরে প্রায় এক ডজন টুইট করার ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে চিফ টুইট ইলন মাস্ক এখন বলছেন, অ্যাপল ও টিম কুকের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হয়েছে’।
২৯ নভেম্বর টুইটারে অ্যাপলকে নিয়ে ঝড় তুলেছিলেন মাস্ক; আইফোন নির্মাতার বিরুদ্ধে বিশ্বে শীর্ষ ধনীর অভিযোগ ছিল, নিজস্ব অ্যাপ স্টোর থেকে টুইটার অ্যাপ মুছে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে অ্যাপল।
তবে, দিন শেষে মাস্কের অভিযোগের মূল বিষয় ছিল টুইটারে অ্যাপলের বিজ্ঞাপনী খরচের রাশ টেনে ধরা এবং অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপ স্টোর ফি। প্রযুক্তি বাজারে অ্যাপলের প্রভাবকে ‘মনোপলি’ হিসেবে বর্ণনা করতেও পিছপা হননি মাস্ক।
‘টুইটারাস্ত্র’ ব্যবহারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মাস্ক অ্যাপলের প্রধান কার্যালয়ের ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, “অ্যাপলের সুন্দর প্রধান কার্যালয়টি ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য টিম কুককে ধন্যবাদ।”
ঘণ্টা তিনেক পরের টুইটে আলোচনা ফলপ্রসু ছিল উল্লেখ করে মাস্ক টুইট করেছেন, “অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে অ্যাপ স্টোর থেকে টুইটার মুছে দেওয়া নিয়ে সৃষ্ট ভুলবোঝাবুঝির সমাধান করেছি আমরা।” এমন কিছু কখনোই ‘অ্যাপলের বিবেচনায় ছিল না’ বলে মাস্ককে নিশ্চিত করেছেন টিম কুক।
তবে, বিজ্ঞাপন বা অ্যাপ স্টোর ফি নিয়ে টিম কুকের সঙ্গে আদৌ কোনো আলাপ হয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি মাস্ক।
সোমবারের অ্যাপলের ব্যবসায়িক ও অ্যাপ স্টোর নীতিমালার সমালোচনার করে কোম্পানির বিরুদ্ধে ‘সেন্সরশিপ’-এর অভিযোগ তুলেছিলেন মাস্ক। অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাকস্বাধীনতাকে ঘৃণা করে, প্রশ্নের আকারে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি।
বিবিসি লিখেছে, ভুয়া তথ্যের প্রচার বন্ধে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ব্যবসা চালু রাখতে চাইলে টুইটার নিয়ে মাস্কের সামনে এখনও ‘অনেক কাজ পরে আছে’ এমন বার্তা পাওয়ার পরই অ্যাপলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন চিফ টুইট।
বুধবার ইলন মাস্কের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইইউ কমিশনার থিয়েরি ব্রিটন এ বার্তা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। ইউরোপে ব্যবসা করতে চাইলে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটিতে কনটেন্ট মডারেশন, ভুয়া তথ্যের প্রচার এবং বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে নানা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবসায়িক কৌশলে পরিবর্তন আনতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
এ বছরেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অনুমোদন পেয়েছে ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’। বিবিসি জানিয়েছে, গত এক দশক ধরে অনলাইন কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট আইন নতুন করে সাজিয়েছে ইউনিয়ন। নতুন আইনে প্রযুক্তিখাতের শীর্ষ কোম্পানির ওপর নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার মোকাবেলার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি যুক্ত হয়েছে।
আইন পরিপন্থী ভূমিকা প্রমাণিত হলে কোম্পানিগুলোর বিশ্ববাজার থেকে আসা কামাইয়ের ছয় শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার ধারা রাখা হয়েছে নতুন আইনে। বারবার আইন ভঙ্গ করলে বা গুরুতর অপরাধ করলে, সেক্ষেত্রে কোম্পানির সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগও আছে এতে।