আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ছয়টি প্রশ্নের জবাব চেয়ে লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে নোটিশ পাঠিয়েছে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করা কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা পাঁচ কোটি ফেইসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে কাজে লাগিয়েছে বলে খবর প্রকাশের পর গত সপ্তাহেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ ।
ভারতের গত লোকসভা নির্বাচনেও ওই সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে এই নোটিশ দেওয়া হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
“ভারত সরকার সকল নাগরিকের গোপনীয়তা ও তথ্য নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলেন। তার ওই অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেস বলেছে, বিজেপি এবং বিহারে তাদের জোটসঙ্গী জে ডি (ইউ) ২০১৪ সালের নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে এই ডেটা ফার্মের সহায়তা নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মূল সংস্থা স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস ল্যাবেরটরিজ ভারতের ওভলেনো বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের (ওবিআই) ব্যবসায়িক অংশীদার। ওবিআই তাদের ওয়েবসাইটে গ্রাহকের তালিকায় বিজেপি, কংগ্রেস ও জে ডি (ইউ) এর নাম উল্লেখ করেছিল।
গেল সপ্তাহে ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল ফোর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ‘অপকর্মের’ খবর প্রকাশ করার পর ওবিআইয়ের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ভারতের আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০১৯ সালে, তার আগে বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচন রয়েছে।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে তথ্য সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে নাগরিকদের প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে কি না, তথ্যগুলো কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং গ্রাহকের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না সে সম্পর্কিত ছয়টি প্রশ্নের জবাব চেয়েছে ভারত সরকার।
নোটিশ প্রসঙ্গে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাথে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
ভারতীয় মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জনগণের আচরণ প্রভাবিত করতে এসব তথ্য ব্যবহার করা হতে পারে বলে খবরে উদ্বিগ্ন ভারত সরকার।
নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বিধি-বহির্ভূতভাবে হাতিয়ে তা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহারকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।