র‍্যানসমওয়্যার ছড়ানো থামিয়ে ‘দৈব নায়ক’

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) সহ কয়েকশ’ সংস্থায় আঘাত হানা র‍্যানসমওয়্যারের বিস্তার ‘দৈবচক্রে’ আটকে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এক নিরাপত্তা গবেষক। কিন্তু কীভাবে তিনি এ কাজ করলেন? সে বিষয়ে বিবিসি-কে বলেছেন তিনি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 09:55 AM
Updated : 14 May 2017, 09:55 AM

‘ম্যালওয়্যারটেক’ ছদ্মনামে পরিচিত ২২ বছর বয়সী এই গবেষক এক সপ্তাহের ছুটিতে ছিলেন। কিন্তু বৈশ্বিক সাইবার আক্রমণের খুবর শুনে র‍্যানসমওয়্যার নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

ক্ষতিকর ওই সফটওয়্যারের কোডে থাকা একটি ‘কিল সুইচ ’খুঁজে পাওয়ার পর, এটি ছড়ানো বন্ধ করে দিতে সক্ষম হন তিনি। তিনি বলেন, সারারাত তদন্তের পর “এটি আসলে অনেকটা দুর্ঘটনাবশত হয়েছে। সারারাতে আমি একবারও চোখ বন্ধ করিনি।”  

যদিও তার এই সন্ধান র‍্যানসমওয়্যারের কারণে হয়ে যাওয়া ক্ষতি পূরণ করবে না, কিন্তু এর ফলে এই ম্যালওয়্যার অন্য কোনো নতুন কম্পিউটারে ছড়ানো বন্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় তাকে ‘দৈব নায়ক’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, বলা হয় বিবিসি’র প্রতিবেদনে। এমন আখ্যায় সম্মতিও দিয়েছেন তিনি। তার ভাষায়, “আমি বলব এটাই ঠিক।” তবে এ ক্ষেত্রে নিজের কৃতিত্বটা খুব একটা বড় করে দেখছেন না তিনি। “এই দৃষ্টি আকর্ষণটা কিছুটা বাড়িয়েই বলা। এই ছুটি শেষ করে দেওয়ার কারণে আমার বস আমাকে আরও এক সপ্তাহ ছুটি দিয়েছেন।”   

এই গবেষক প্রথমে খেয়াল করেন এই ম্যালওয়ার প্রতিবার কোনো নতুন কম্পিউটারে আঘাত হানার সময় একটি নির্দিষ্ট ওয়েব অ্যাড্রেসে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। কিন্তু ওই ওয়েব অ্যাড্রেস আসলে বিভিন্ন অক্ষর মেশানো একটি লম্বা বাক্য ছিল, আর ওই নামে কোনো ওয়েবসাইট নিবন্ধিত ছিল না। 

গবেষক ওই বাক্যের ঠিকানাটি নিবন্ধন করে ফেলেন আর এটি ১০.৬৯ ডলারের বিনিময়ে কিনে নেন। এর মালিকানা পাওয়ার পর কোন কোন কম্পিউটার থেকে এটি অ্যাকসেস করা হচ্ছে তা দেখার সুযোগ পান তিনি, সেই সঙ্গে কীভাবে এই র‍্যানসমওয়্যার ছড়াচ্ছে তার ধারণাও পেয়ে যান।

এমনটা করার সময়, অপ্রত্যাশিতভাবেই র‍্যানসমওয়্যারটিতে থাকা ছড়ানো বন্ধ করে দেওয়ার অংশটি বন্ধ করে দেন তিনি।

এর মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে ডিভাইসে এই র‍্যানসমওয়্যার ছড়ানো বন্ধ হলেও, আক্রান্ত কম্পিউটারগুলো ঠিক হবে না। এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা গবেষকরা সতর্ক করে বলেন, সামনে নতুন ম্যালওয়্যার আসতে পারে যাতে হয়তো ‘কিল সুইচ’ থাকবে না।

ম্যালওয়্যারটেক বলেন, “আমরা এই একটিকে থামাতে পেরেছি, কিন্তু সামনে আরেকটি আসতে পারে আর হয়তোবা সেটি আমাদের পক্ষে থামানোর মতো হবে না। এখানে অনেক অর্থ আছে, তাদের (আক্রমণকারীদের) থামার কোনো কারণই নেই। কোডটি বদলে আবারও শুরু করাটা তাদের জন্য খুব একটা বেশি কিছু নয়।”