যুক্তরাষ্ট্রে এখন সাড়ে ৭২ কোটি ডলারের এক প্রাইভেসি সংশ্লিষ্ট মামলার তহবিল পেতে আবেদন করতে পারবেন মার্কিন ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা।
এর কারণ হচ্ছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অনুমতি ছাড়াই আট কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ব্যবহারকারীর ডেটা শেয়ার করেছে ফেইসবুক।
২০১৮ সালে উঠে আসা ওই অভিযোগ এখনও বিশ্বের অন্যতম প্রোফাইল ডেটা প্রাইভেসি স্ক্যান্ডাল হিসেবে বিবেচিত।
এই অভিযোগের দায় স্বীকার না করলেও সমঝোতা তহবিল প্রদানে রাজী হয়েছে ফেইসবুকের মালিক কোম্পানি মেটা।
এটি কারা পেতে পারেন?
আদালতের নথি বলছে, ২০০৭ সালের ২৪ মে থেকে ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ফেইসবুক ব্যবহার করা যে কেউই এটি ব্যবহার করতে পারেন। আর এর সংখ্যা হতে পারে ২৫ থেকে ২৮ কোটির মধ্যে।
কীভাবে পেতে পারেন?
ফেইসবুকের ‘সেটেলমেন্ট ওয়েবসাইট’ বা মেইল বার্তার মাধ্যমে এই আর্থিক তহবিলের আবেদন করা যাবে। তবে, এর মধ্যে উল্লেখ থাকতে হবে:
● ব্যবহারকারীর নাম
● ঠিকানা
● জন্মের তারিখ
● ফেইসবুক প্রোফাইল লিংক
● যোগাযোগ বিবরণি
● অর্থ পরিশোধের তথ্য
আবেদনকারীরা এই অর্থ পেতে পারেন:
● সরাসরি ব্যাংকে
● ‘পেপাল’-এ।
● মোবাইল অ্যাপ কোম্পানি ‘জেল’-এ।
● মোবাইল পেমেন্ট সেবা ‘ভেনমো’-তে।
● প্রিপেইড মাস্টারকার্ডে।
এই আর্থিক তহবিল দাবির শেষ সময় ২৫ অগাস্ট। তবে, যারা এই সমঝোতার বিরোধিতা করতে চান বা মেটার বিরুদ্ধে নিজেদের আলাদা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার বহাল রাখতে চান, তারা ২৬ জুলাই পর্যন্ত সময় পাবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
তারা কী পরিমাণ অর্থ পাবেন?
ক্লাস অ্যাকশন মামলা চলাকালীন যেসব যোগ্য দাবিদারের একটি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ছিল, প্রতি মাসের হিসাবে এক পয়েন্ট করে দেওয়া হবে তাদের।
এই সমঝোতার নেটমূল্যের সঙ্গে (সাড়ে ৭২ কোটি ডলার থেকে আইনি ও প্রশাসনিক খরচ বাদ দিলে যা দাঁড়ায়) ব্যবহাকারীর সর্বমোট পয়েন্ট ভাগ করে নির্ধারিত হবে প্রত্যেকের জন্য কী পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
তাদের কখন অর্থ পরিশোধ করা হবে?
মার্চের শেষে এই চুক্তির প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন ফেডারেল আদালতের এক বিচারক। তবে, এর চূড়ান্ত শুনানি ৭ সেপ্টেম্বর। আর এই প্রক্রিয়া বিলম্বের জন্যেও আপিল হতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
কীভাবে এটি মেটার ওপর প্রভাব ফেলবে?
প্রযুক্তি লেখক জেমস বল বিবিসি নিউজকে বলেন, মেটার নির্বাহীরা এই সমঝোতায় হয়তো খুশিই হবেন।
“একদিকে, সাড়ে ৭২ কোটি ডলার একটি বড় অংকের অর্থ। তবে, মেটা এত বড় কোম্পানি যে এই সংখ্যা তাদের তিন দিনেরও কম সময়ের আয়।” --বলেন তিনি।
“ঐতিহাসিকভাবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো বিতর্কের মাধ্যমে উঠে আসা বিভিন্ন প্রাইভেসি সংশ্লিষ্ট সমস্যা উপস্থাপনে আগ্রহী মেটা। তবে, বিষয়টি সত্যিই এমন কি না, তা দেখতে হবে। কারণ, ভবিষ্যতে এমন অনেক নিষ্পত্তি আসবে, যা কোম্পানির পর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।”