ওপেনএআইয়ের এআই টুল সোরা এবার শর্ট ফিল্ম বানিয়েছে

“আমাদের কাছে এমন অনেক গল্প আছে যেগুলো পর্দায় আনা একসময় অসম্ভব মনে হয়েছে। এখন সেগুলো নিয়ে কাজ করা যাবে। ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজম’-এর নতুন যুগও বলা যায় একে।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2024, 09:22 AM
Updated : 27 March 2024, 09:22 AM

সম্প্রতি নতুন এআই ভিডিও টুল ‘সোরা’র মাধ্যমে তৈরি প্রথম শর্ট ফিল্ম উন্মোচন করেছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা কোম্পানি ওপেনএআই, যাকে ‘সম্পূর্ণ পরাবাস্তব’ হিসাবে বর্ণনা করছেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা।

গত মাসেই নতুন এআই ভিডিও টুল ‘সোরা’ উন্মোচন করেছিল ওপেনএআই। এরইমধ্যে এর ক্ষমতা নিয়ে একইসঙ্গে উচ্ছাস ও ভয় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে।

সে সময় কোম্পানিটি এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করে এ টুলের তৈরি প্রাথমিক বিভিন্ন ক্লিপে দেখিয়েছিল, কীভাবে টুলটি একটি সহজ লিখিত রূপ নিতে পারে। যেমন ‘একটি পাহাড়ের চূড়ায় পডকাস্টিং করছে দুটি গোল্ডেন রিট্রিভার কুকুর’ এমন প্রম্পটের একটি বাস্তবসম্মত ভিডিও বানিয়ে দেখায় টুলটি।

সোরা’র সৃজনশীল সম্ভাবনাকে বর্তমানে ছোট পরিসরে এক দল ভিজুয়াল শিল্পী ও পরিচালকদের দিয়ে পর্যবেক্ষণ করানো হচ্ছে, যেখানে এই প্রযুক্তিতে প্রাথমিক প্রবেশাধিকার পেয়েছেন তারা।

“একেবারে বাস্তব দেখায় এমন দুর্দান্ত কনটেন্ট বানাতে পারে সোরা। তবে, এক্ষেত্রে আমাদেরকে রোমাঞ্চিত করেছে এ টুলের পরাবাস্তব বা ‘সুরিয়াল’ কনটেন্ট তৈরি করার সক্ষমতা,”  বলেছে কানাডীয় প্রযোজনা কোম্পানি ‘শাই কিডস’। একজন বেলুনের মাথাওয়ালা ব্যক্তিকে নিয়ে একটি শর্ট ফিল্ম তৈরির দায়িত্ব তারা দিয়েছিলেন সোরাকে।

“আমাদের কাছে এমন অনেক গল্প আছে যেগুলো পর্দায় আনা একসময় অসম্ভব মনে হয়েছে। এখন সেগুলো নিয়ে কাজ করা যাবে। এমনকি ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজম’-এর নতুন যুগও বলা যায় একে। আর যাদের কাছে বিভিন্ন গল্প লুকিয়ে আছে, তাদের জন্য গোটা বিশ্বকে সেগুলো দেখানোরও সুযোগ তৈরি হবে এতে।”

নানা বিষয়ে দখল থাকা শিল্পী পল ট্রিলোর মতে, ভিডিও তৈরি করতে পারে এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবির্ভাবের মানে–  বিভিন্ন এমন ধারণাও তৈরি করা যাবে যা প্রচলিত সময়, অর্থ এমনকি দক্ষতায় বানানোর সুযোগ সীমিত।

“প্রথমবারের মতো সোরা’র মাধ্যমে কাজ করতে পেরে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে নিজেকে শৃঙ্খল মুক্ত মনে হচ্ছে আমার।”

“সোরা সবচেয়ে শক্তিশালী দিকটি দেখা যায় যখন আপনি পুরনো কিছুর প্রতিলিপি না বানিয়ে নতুন জীবিত কিছু বা অসম্ভব কোনও ধারণা তৈরি করছেন তখন। তবে, সোরা ছাড়া অন্যথায় আমরা তা কখনওই দেখার সুযোগ পেতাম না।”

তবে, অনেকেই এ প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের ধারণা, এর মাধ্যমে ডিপফেইক ভিডিও তৈরির ঝুঁকি থাকার পাশাপাশি ভুল তথ্য ছড়াতে এর অপব্যবহার হতে পারে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সোরা উন্মোচনের সময় এক ব্লগ পোস্টে এ টুলের অপব্যবহারের ঝুঁকির কথা স্বীকার করে ওপেনএআই বলেছে, এর মডেলটিকে ভালভাবে পরীক্ষা করার জন্য একটি ‘রেড টিম’ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, সোরা’র মাধ্যমে তৈরি বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট শনাক্ত করার টুলও তৈরি হচ্ছে।

ওপেনএআইয়ের অন্যান্য এআই পণ্য চ্যাটজিপিটি ও ডাল-ই’র এরইমধ্যে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, যা হিংসাত্মক বা যৌনাচার সংশ্লিষ্ট কনটেন্টের অনুরোধ করা ও সেলিব্রিটি বা সুপরিচিত ব্যক্তির ছবি তৈরিতে বাধা দেয় ব্যবহারকারীকে।