এ বছরটি গণতন্ত্রের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এ বছর ৫০টিরও বেশি দেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
Published : 12 Oct 2024, 02:35 PM
যত কল্যাণমুখী প্রযুক্তি আসবে, ততই দুষ্ট লোকজন তাদের কাজেও ওই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, এটাই স্বাভাবিক। আর এই বিষয়টিা নিয়েই সতর্ক করেছে ওপেনএআই।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির শীর্ষ এই কোম্পানি সতর্ক করে বলেছে, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বিদেশী হ্যাকিং গ্রুপগুলো এআই টুল চ্যাটজিপিটি এবং ডাল-ই ব্যবহার করছে।
এ বিষয়ে ৫৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওপেনএআই। এরইমধ্যে বছরের শুরু থেকে অন্তত ২০টি এমন ঘটনা শনাক্তের কথাও উল্লেখ করেছে কোম্পানিটি।
পাশাপাশি, আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন আরও ঘটনার শঙ্কা আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
কেবল অনলাইনে ভুয়া পরিচয় তৈরি করাই নয়, ওয়েবসাইটের জন্য নিবন্ধ লেখা, সোশাল মিডিয়াতে কনটেন্ট পোস্ট করার মতো বিভিন্ন কাজও প্রতারণামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে চ্যাটজিপিটি। এ ছাড়া, সোশাল মিডিয়ার পোস্ট কয়েক ধাপে বিশ্লেষণ করে তার উত্তর দিতেও এর ব্যবহার হচ্ছে বলে উল্লেখ রয়েছে কোম্পানির প্রতিবেদনে।
এ বছরটি গণতন্ত্রের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এ বছর ৫০টিরও বেশি দেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির সম্প্রতিক উত্থান ও এ প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, এমন প্রভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে বেশ কয়েকটি নেতৃস্থানীয় সংস্থা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
গত বছর ওপেনএআই প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছিলেন, সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য হুমকি হতে পারে, এমন এআই ব্যবস্থা নিয়ে তিনি ‘নার্ভাস’। কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে অল্টম্যান বলেছিলেন, এমনভাবে বিভ্রান্তি ছড়াতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হতে পারে বলে যেভাবে আগে কখনও এ প্রযুক্তির ব্যবহার হয়নি।
“বিশ্বব্যাপী নির্বাচনের এ বছরে আমরা জানি বিভিন্ন সাইবার অপরাধী দল এবং তাদের গোপন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ও কয়েক স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। এরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটের অন্যান্য প্ল্যাটফর্মজুড়ে প্রতারণামূলক প্রচারের জন্য আমাদের এআই মডেলগুলো ব্যবহার করতে পারে।” – নিজেদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে ওপেনএআই।
“বছরের শুরু থেকে, আমরা সারা বিশ্বে ২০টির বেশি অপারেশন ও প্রতারণামূলক নেটওয়ার্ক ব্যাহত করেছি, যেগুলো আমাদের মডেল ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিল।”
কয়েকটি ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে চীন, ইরান ও রাশিয়াভিত্তিক বিভিন্ন হ্যাকিং গ্রুপের কথা উল্লেখ করেছে ওপেনএআই।
যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকাকে লক্ষ্য করে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার কনটেন্ট তৈরি করা এক ‘রাশিয়াভিত্তিক হ্যাকিং গ্রুপ’-এর উদাহরণসহ প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি কেইস স্টাডির বিস্তারিতও তুলে ধরেছে কোম্পানিটি।
“এ ঘটনায় ছোট মন্তব্য, দীর্ঘ নিবন্ধ ও ছবি তৈরি করতে আমাদের মডেলগুলো তারা ব্যবহার করেছে। এরপরে, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার নিবন্ধগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়, যা আফ্রিকা ও যুক্তরাজ্যের নিউজ পোর্টাল হিসেবে নিজেদের জাহির করছিল।” – বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট কোনো সাইবার গ্রুপের নাম উল্লেখ ছিল না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।