পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মদ্যপান সংশ্লিষ্ট হেপাটাইটাসে আক্রান্ত হয়ে এক মাসের মধ্যে মারা যান। এমনকি ২৫ শতাংশ ছয় মাসও বেঁচে থাকতে পারেন না।
Published : 03 Nov 2024, 06:40 PM
বহু বছর ধরে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। আর এতে উঠে এসেছে বেশ কিছু ঝুঁকির কথা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি’র অধীনস্থ পরীক্ষাগার ‘প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি’র বিজ্ঞানীরা ‘অ্যালকোহল-অ্যাসোসিয়েটেড হেপাটাইটিস’ নামে পরিচিত যকৃতের এক ধরনের রোগ নিয়ে গবেষণা করেছেন। যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন ছয়টি বিয়ার বা গোটা এক বোতল ওয়াইনের সমান মদ পান করেন, এই রোগে তারা প্রায়শই আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
যকৃতের বেশ কিছু রোগ রয়েছে যার সংশ্লিষ্টতা মদ্যপানের সঙ্গে। এর মধ্যে আছে ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস এবং হেপাটাইটিস।
তবে, মদ্যপান সংশ্লিষ্ট হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, যা যকৃত নষ্ট করে ফেলার পাশাপাশি আক্রান্তদের মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মদ্যপান সংশ্লিষ্ট হেপাটাইটাসে আক্রান্ত হয়ে এক মাসের মধ্যে মারা যান। এমনকি ২৫ শতাংশ ছয় মাসও বেঁচে থাকতে পারেন না। এ অবস্থাটি রোগীর দীর্ঘকালীন ক্ষতি সাধন করতে পারে, যা সাধারণত শরীরে বেশ কয়েক বছর ধরে দানা বাঁধে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ১০৬ জন মানুষের রক্ত ও টিস্যুর নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন। এর মধ্যে ৫৭টি নমুনা এসেছে মদ্যপান সংশ্লিষ্ট হেপাটাইটিস থেকে। আর ৪৯টি নমুনা ছিল মদ্যপান না করেও যকৃতের রোগে আক্রান্ত, মদ্যপান থেকে সিরোসিসে আক্রান্ত অথবা একেবারে সুস্থ সবল ব্যক্তিদের।
নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এ গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের রক্তের দেড় হাজারেরও বেশি নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। এতে তারা অ্যালকোহল-অ্যাসোসিয়েটেড হেপাটাইটিস রোগের প্রোটিন শনাক্ত করেছেন। এমনকি কীভাবে এ রোগ আণবিক পর্যায়ে দেহের গতিবিধি পরিবর্তন করে, তার বিস্তারিত তথ্যও মিলেছে এতে।
গবেষণা দলটি খুঁজে পেয়েছে, এর মধ্যে প্রায় একশটি প্রোটিন রোগীদের দেহে অ্যালকোহল-অ্যাসোসিয়েটেড হেপাটাইটিস রোগের সংক্রমণ ঘটায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রক্ত জমাট বাঁধার মতো কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
এমনকি যকৃতের গতানুগতিক প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এইসব প্রোটিনে পরিবর্তন এলে তা যকৃতের সাধারণ কাজ করার ক্ষমতাও কমিয়ে ফলে, ফলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে নতুন ও নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থা আনায় তাদের এ গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।