ক্যালিফোর্নিয়ায় নতুন বিল: সংবাদ কনটেন্ট বর্জনের হুমকি মেটার

“পৃথিবীর অন্যতম ধনী কোম্পানিগুলো যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসার ভয়ে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করে দেয়, তবে তার চেয়ে জঘন্য আর কিছু হতে পারে না।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2023, 01:10 PM
Updated : 7 June 2023, 01:10 PM

ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা সংবাদ কনটেন্টের জন্য প্ল্যাটফর্মগুলোকে ফি দিতে হবে এমন নতুন আইন আনতে পারে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য। আর তেমনটা হলে প্ল্যাটফর্ম দুটি থেকে সব ধরনের সংবাদ সরিয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছে সামাজিক মাধ্যমদুটির মালিক কোম্পানি মেটা।

মেটার জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক অ্যান্ডি স্টোন এক টুইটবার্তায় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রস্তাবিত ‘সাংবাদিকতা সংরক্ষণ আইন’কে বলেছেন “ক্যালিফর্নিয়ার প্রকাশকদের নাম ভাঙিয়ে অঙ্গরাজ্যের বাইরের বড় মিডিয়া কোম্পানিগুলোর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য রাখা থোক বরাদ্দ।”

স্টোন আরো বলেন “প্রকাশক ও সম্প্রচারকারীরা নিজেরাই আমাদের প্ল্যাটফর্মে কনটেন্টগুলো পোস্ট করেন সেটা এই নতুন আইনের চোখেই পড়েনি, অথচ ফেইসবুক আসার পরেই গত ১৫ বছর ধরে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংবাদ শিল্প আগের তুলনায় ফুলেফেঁপে এতো বড় হয়েছে।”

ওকল্যান্ডের ডেমক্র্যাটিক দলের জনপ্রতিনিধি বাফি উইকসের পৃষ্ঠপোষকতায় উত্থাপিত এই বিল বলছে, গুগল এবং ফেইসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে কোনো সংবাদ কন্টেন্ট ব্যবহার অথবা পোস্ট করা হলে স্থানীয় সংবাদ প্রকাশকদেরকে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এক ধরনের ‘সাংবাদিকতা সেবা ব্যবহার ফি’ দিতে হবে। সেইসঙ্গে এই ব্যবহার ফি থেকে অর্জিত লাভের শতকরা ৭০ ভাগ সাংবাদিকতা পেশার পেছনে ব্যয় করতে হবে।

বিলটি উত্থাপনকারী উইকস তার বক্তব্যে বলেছেন “মেটা প্রতিটি দেশেই ভয় দেখানোর এই কৌশল করেছে, কিন্তু সব জায়গাতেই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।” সেইসঙ্গে তিনি যোগ করেন “পৃথিবীর অন্যতম ধনী কোম্পানিগুলো যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসার ভয়ে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করে দেয়, তবে তার চেয়ে জঘন্য আর কিছু হতে পারে না।”

উইকসের একজন মুখপাত্র সিনএনকে জানিয়েছেন বিলটি আগামী বৃহস্পতিবার ভোটাভুটির জন্য ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যাসেম্বলিতে তোলা হবে।

‘মিডিয়াগিল্ড অফ ওয়েস্ট’ এবং ‘প্যাসিফিক মিডিয়া ওয়ার্কার গিল্ড’সহ ক্যালিফর্নিয়ার বড় সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো প্রস্তাবিত এই বিলটিকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এক যৌথ বিবৃতিতে এই দুই শীর্ষ সাংবাদিক সংঘ মেটা এবং গুগলকে বলেছে “প্রতাশালী মহাজন যারা ক্রমশ বাড়তে থাকা নিন্মমানের তথ্যপঞ্জি দেখভাল করেন, সেগুলো ভাড়া দিয়ে বিজ্ঞাপনের পয়সা খান, কিন্তু যারা খেঁটেখুটে সেগুলো বের করে তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেওয়ার বেলাতেই যত আপত্তি।”

তবে সমালোচনা আছে বিলটির দিকেও। গণমাধ্যমের পক্ষে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা ‘ফ্রি প্রেস অ্যাকশন’ বিলটিকে সমালোচনা করে বলেছে “বিশ্বস্ত ও স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিকতার পক্ষে এতে কিছু নেই, বরং বড় বড় মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে লাভবান করার পাঁয়তারা মাত্র।”