“বিভিন্ন এআই সিস্টেমকে দ্রুত এবং আরও কার্যকর করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটির সমাধান করেছে আমাদের এই নতুন চিপ।”
Published : 31 Mar 2025, 11:13 AM
বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। তবে বর্তমানে বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেম এআইয়ের বিপুল চাহিদা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
এর একটি বড় সমস্যা হচ্ছে কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মধ্যে ডেটা পাঠাতে অনেক শক্তি লাগে। আর এ শক্তির অভাব এ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজকে ধীরগতির করে দেয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
এ সমস্যার এক রোমাঞ্চকর সমাধান খুঁজে পেয়েছেন ‘কলম্বিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ের গবেষকরা, যা পরবর্তী প্রজন্মের বিভিন্ন এআই সিস্টেমের জন্য সহায়ক হবে বলে দাবি তাদের।
গবেষণায় নতুন ধরনের একটি চিপ তৈরি করেছেন অধ্যাপক কেরেন বার্গম্যান ও তার গবেষণা দল, যেখানে আলোনির্ভর বা ফোটোনিক ও প্রচলিত ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিকে একটি থ্রিডি কাঠামোতে সমন্বয় করেছেন তারা।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার ফোটোনিক্স’-এ।
গবেষকরা বলছেন, এ নতুন চিপটি অনেক দ্রুত ডেটা স্থানান্তর করতে সক্ষম ও বর্তমান সিস্টেমের তুলনায় অনেক কম শক্তি ব্যবহার করে।
অধ্যাপক বার্গম্যান বলেছেন, “আমরা বিস্ময়কররকম কম শক্তি ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ ডেটা পাঠানোর একটি উপায় বের করেছি।
“বিভিন্ন এআই সিস্টেমকে দ্রুত এবং আরও কার্যকর করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটির সমাধান করেছে আমাদের এই নতুন চিপ।”
এ যুগান্তকারী চিপটি তৈরি হয়েছে ‘কর্নেল ইউনিভার্সিটির’র অধ্যাপক অ্যালিওশা মোলনারের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দলের সহযোগিতায়।
এতে ৮০টি লাইট ট্রান্সমিটার ও রিসিভার রয়েছে, যা একটি ছোট জায়গায় প্যাক করা আছে। এটি প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ গিগাবিট পর্যন্ত উচ্চ গতির ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে এটি।
গবেষকরা বলছেন, প্রতিটি ডেটা প্যাকেট পাঠাতে কেবল ১২০টি ফেমটোজুল শক্তির ব্যবহার করে এই চিপ যা খুবই সামান্য। আর এ কারণেই প্রচলিত চিপের তুলনায় এটি অনেক বেশি শক্তি সাশ্রয়ী।
বাণিজ্যিক কারখানায় এরইমধ্যে তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে চিপটি, যা ফলে এর তৈরি প্রক্রিয়াও হয়েছে অনেক সহজ। কম খরচে ব্যাপকহারে উৎপাদন করা যেতে পারে এই চিপ।
নির্মাতাদের দাবি, নতুন প্রযুক্তিটি চ্যাটজিপিটির মতো বড় মডেল থেকে শুরু করে রোবট ও স্ব-চালিত গাড়িতে রিয়াল-টাইম সিস্টেম পর্যন্ত দ্রুত এবং আরও শক্তিশালী এআই ব্যবহারের দরজা খুলে দেবে।
এ চিপের প্রভাব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাইরেও বিস্তৃত। সুপার কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও কম্পিউটারের মেমোরি সংরক্ষণ এবং অ্যাক্সেসের পদ্ধতিও উন্নত করতে পারে এটি। পাশাপাশি দ্রুত ও শক্তি সাশ্রয়ী কম্পিউটিংয়ের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে চিপটি।
এ গবেষণাটি ছিল ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ‘কর্নেল ইউনিভার্সিটি, ‘এয়ারফোর্স রিচার্স ল্যাবরেটরি’ ও ‘ডার্টমাউথ কলেজ’-এর যৌথ প্রচেষ্টার অংশ।