সংঘর্ষের ঝুঁকিতে পড়েছিল রাশিয়া ও নাসার দুই স্যাটেলাইট

পরস্পরের পাশ কাটানোর সময় স্যাটেলাইট দুটোর মধ্যে দূরত্ব ছিল ২০ মিটারেরও কম।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2024, 06:14 AM
Updated : 1 March 2024, 06:14 AM

রাশিয়ার এক স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংঘর্ষ হতে হতে কোনো ক্রমে বড় বিপদ এড়াতে পেরেছে নাসার একটি স্যাটেলাইট।

নাসা বলেছে, তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ওই ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল। স্যাটেলাইটগুলো অল্পের জন্য সংঘর্ষ থেকে বেঁচে যাবে বলেই তারা ধারণা করেছিল।

তবে স্যাটেলাইট দুটির মধ্যে সংঘর্ষ হলে ‘বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ হতে পারত’ বলে সতর্ক করা হয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিবৃতিতে।

নাসার স্যাটেলাইটটি ‘থার্মোস্ফেয়ার লোনোস্ফেয়ার মেসোস্ফেয়ার এনার্জেটিক্স অ্যান্ড ডাইনামিক্স মিশন’ বা ‘টাইমড’ নামের এক মিশনে রয়েছে, যা উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ২০০১ সালে। এরপর থেকেই কক্ষপথে ঘুরছে স্যাটেলাইটটি।

কীভাবে সূর্য ও মানুষ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে কম জানা অঞ্চল ‘মেসোস্ফেয়ার ও নিম্ন থার্মোস্ফিয়ার/আয়নোস্ফিয়ার’-এর গতিবিধি পরিবর্তন করছে, তা নিয়ে গবেষণা চালানো এ স্যাটেলাইটের কাজ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওই অংশে সবার আগে সূর্যের আলো পৌঁছায়।

নাসার ওই স্যাটেলাইট রাশিয়ার এক অব্যবহৃত স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকিতে পড়েছিল। ‘কসমস ২২২১’ নামের ওই রুশ স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে।

নাসা বলছে, ঝুঁকি থাকলেও স্যাটেলাইট দুটি নিরাপদেই একে অপরকে পাশ কাটিয়ে গেছে। কক্ষপথে ঘোরার এক পর্যায়ে আবারও সেগুলো পরস্পরের কাছাকাছি আসবে। তবে এবার তারা কক্ষপথে যতটা কাছাকাছি এসেছিল, এটাই তাদের সম্ভাব্য নিকটতম অবস্থান। ধীরে ধীরে তারা একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

কক্ষপথের বিভিন্ন বস্তুকে ট্র্যাক করা স্পেস ডেটা কোম্পানি ‘লিওল্যাবস’ জানিয়েছে, পরস্পরের পাশ কাটানোর সময় স্যাটেলাইট দুটোর মধ্যে দূরত্ব ছিল ২০ মিটারেরও কম।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ বিষয়টিকে একটি ‘বিরল ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ‘লিওল্যাবস’। তারা বলছে, গত দুই বছরে এ ধরনের ছয়টি ঘটনা দেখা গেছে। সংঘর্ষ ঘটলে মহাকাশে স্যাটেলাইট দুটোর সাত হাজারের মত টুকরো ছড়িয়ে পড়ত। ফলে, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ধ্বংসাবশেষের মাত্রা বেড়ে যেত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।

আর এসব ধ্বংসাবশেষ কেবল অন্যান্য স্যাটেলাইট নয়, মনুষ্যবাহী নভোযানের যাত্রাকেও বিপদে ফেলতে পারত বলে জানিয়েছে ‘লিওল্যাবস’।

কক্ষপথের ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বস্তু বা ‘স্পেস জাংক’ নিয়ে ক্রমাগত সতর্ক করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব আবর্জনা বাড়তে থাকলে আগামীতে মহাকাশে যাওয়া জটিল বা অসম্ভব হয়ে উঠবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।