পুরো সক্ষমতা নিয়ে এআইয়ের পেছনে এবার শীর্ষ বিজ্ঞাপনী কোম্পানি

মানুষের তোলা ছবি আর এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবির মধ্যে পার্থক্য মুছে দেওয়া সম্ভব হলে বিজ্ঞাপন ও মিডিয়া জগতে কাজ করা অনেকেরই হয়তো চাকরি থাকবে না।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 01:53 PM
Updated : 5 June 2023, 01:53 PM

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনী সংস্থার খেতাবধারী ডব্লিওপিপি জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন তৈরির জন্য জোট বেঁধেছে চিপ প্রস্তুতকারক শীর্ষ কোম্পানি এনভিডিয়ার সঙ্গে।

সোমবার কোম্পানি দুইটি তাদের অংশীদ্বারিত্বের ঘোষণা দেয়। সেইসঙ্গে তাইপেতে চলমান ‘কম্পিটেক্স’ প্রদর্শনীতে ডব্লিওপিপির নতুন কনটেন্ট ইঞ্জিনের একটি নমুনা এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছে সিএনএন।

“জেনারেটিভ এআই বিপণনের জগৎটাকে দুর্বার গতিতে বদলে দিচ্ছে। এই প্রযুক্তি আগামীতে বাণিজ্যিক কন্টেন্ট তৈরির ধারাকে আমূল বদলে দেবে।” – বলেছেন ডব্লিওপিপি’র সিইও মার্ক রেড।

এই নতুন কন্টেন্ট ইঞ্জিন প্ল্যাটফর্মটি জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে ডব্লিওপিপির নির্মাতা দলকে অ্যাডোবি এবং গেটি ইমেজের মতো এজেন্সি থেকে ছবি সংগ্রহ করে বিজ্ঞাপনী ক্যাম্পেইন বানিয়ে দেবে। ডব্লিওপিপি বলছে, “সেটি নির্মাতার সক্ষমতা এবং কাজের গতি অনেক বাড়াবে।” 

হুয়াংয়ের দেখানো কন্টেন্ট ইঞ্জিনটি দিয়ে মরুভূমির মধ্য দিয়ে গাড়ি চালানোর বিশ্বাসযোগ্য ভিডিও ফুটেজ বানিয়ে দেখায় ডব্লিওপিপি।

এআইনির্ভর কন্টেন্ট ইঞ্জিনের মানে হচ্ছে গাড়িটিকে লন্ডন কিংবা রিও ডি জেনেরিও’র রাস্তায় চালিয়ে স্থানীয় গ্রাহকদের উপযোগী করে বিজ্ঞাপনচিত্র বানানো যাবে, সেই লোকেশনে গিয়ে শুটিংয়ের মোটা অংকের খরচ এবং ঝাক্কিঝামেলা বাদেই।

যে কোনো বিজ্ঞাপনকে স্থানীয় গ্রাহকদের উপযোগী শুধু রূপান্তরই করা যাবে না, সেইসঙ্গে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম যেমন ফেইসবুক, টিকটকের জন্য উপযোগী করে আলাদা আলাদা সংস্করণও তৈরি করা যাবে। 

“আপনি চাইলে স্থানীয় পর্যায়ের ভোক্তা উপযোগী করে এমন বিজ্ঞাপন বানাতে পারবেন যা তাদেরকে অনেক বেশি স্পর্শ করবে। শুধু কি তাই? এমন কাল্পনিক চিত্রও আপনি চাইলে বানাতে পরবেন বাস্তব জগতে যার কোনো অস্তিত্বই নেই।” সংবাদসংস্থা সিএনএনকে এমন ব্যাখ্যা দিলেন এনভিডিয়ার ডেভেলপার প্রকল্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট গ্রেগ এসটেস।

উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গ্রহকদের কাছে নিত্যনতুন সেবা পৌঁছে দিতে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর ব্যাপক আকারে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্বশেষ সংযোজন এই নতুন কন্টেন্ট ইঞ্জিন। মানুষের তোলা ছবি আর এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবির মধ্যে পার্থক্য মুছে দেওয়া সম্ভব হলে বিজ্ঞাপন ও মিডিয়া জগতে কাজ করা অনেকেরই হয়তো চাকরি থাকবে না।

ডব্লিওপিপি বলছে তাদের নতুন প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে “অনেক এগিয়ে।” এর কারণ হিসাবে কোম্পানিটির ব্যাখ্যা- “আগে  অনেক কর্মী আলাদা আলাদা ভাবে একটি একটি করে কনটেন্ট তৈরি করতেন।” 

নতুন প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে ছোট আকারের ক্রিয়েটিভ টিম খুব অল্প সময়ে  প্রচুর বিজ্ঞাপনী কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে।

“এআই-এর কারণে যে নতুন সৃষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি হবে সেটি  খুঁজে বের করার চেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়া কর্মসংস্থানের তালিকা করা বরং সহজ” –  ফাইনান্সিয়াল টাইমসের সঙ্গে বলেছেন ডব্লিওপিপি সিইও রেড। 

এনভিডিয়ার হ্যাং বলেন “পৃথিবীর বড় বড় শিল্পখাত, এমনকি ৭০ হাজার কোটি ডলারের বিজ্ঞাপন খাতও এআইয়ের সুবিধাগুলো বুঝতে পেরে এই প্রযুক্তিটির দিকে ঝুঁকছে” সঙ্গে আরও যোগ করেন ডব্লিওপিপি এখন ব্র্যান্ডগুলোকে “এমন মাত্রায় পণ্যের বিপণন সুবিধা দিতে পারবে যা আগে কখনোই সম্ভব ছিলো না।”