‘মানুষের চেয়েও অনুভূতিশীল’ কৃত্রিম ত্বক বানালেন বিজ্ঞানীরা

এর বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে নদীর দূষণের উৎস শনাক্ত করা ও সন্দেহজনক লাগেজে বিস্ফোরকের উপস্থিতি ‘টের’ পাওয়া।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2023, 09:49 AM
Updated : 26 Jan 2023, 09:49 AM

বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের কৃত্রিম ত্বক তৈরির দাবি করছেন, যা মানব ত্বকের চেয়েও বেশি ‘অনুভূতিশীল’।

‘দ্বৈত অনুভূতিসম্পন্ন কৃত্রিম ত্বক’ তৈরি করেছেন সিঙ্গাপুরের ‘নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটির’ একদল গবেষক। এটি কেবল কোনো বস্তুর মাধ্যমে দেওয়া চাপই শনাক্ত করতে পারে না, বরং চাপের ধরনও বলে দিতে পারে।

ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানব-চালিত ইন্টারফেইস ও রোবট’সহ পরবর্তী প্রজন্মের ইলেকট্রনিক্স সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে এই প্রযুক্তিতে।

আর এই কৃত্রিম ত্বক এমন বিভিন্ন যন্ত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা কৃত্রিম অঙ্গে অনুভূতি দেওয়ার ও সংবেদনশীল করার নতুন উপায় দিতে পারে।

“আমরা মানব ত্বকের চেয়েও উচ্চ সংবেদনশীল ক্ষমতাসম্পন্ন কৃত্রিম ত্বক তৈরি করেছি।” --বলেন নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ইফান ওয়াং।

মানব ত্বক বেশিরভাগ তথ্যই স্পর্শের মাধ্যমে অনুভব করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর পাশাপাশি কৃত্রিম ত্বক কাছাকাছি ঘটা কার্যক্রমের এনকোড করা ‘কগনিটিভ’ তথ্যও পায়। 

“এই কাজ পরবর্তী প্রজন্মের রোবোটিক প্রযুক্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা প্রচলিত বিভিন্ন স্পর্শ সেন্সরের চেয়ে উচ্চমানের।”

এই কৃত্রিম ত্বক এরইমধ্যে বিভিন্ন উপায়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। এর মধ্যে আছে ইলেকট্রনিক স্ক্রিনে স্ক্রল করা, ম্যাপ নেভিগেট করা ও বিভিন্ন ভার্চুয়াল ভিডিও গেইমের চরিত্র হেরফের করা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই কৃত্রিম ত্বক নিকটবর্তী লক্ষ্যবস্তুর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সংকেত শনাক্ত করতে পেরেছে।

এই গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘স্মল’-এ।

এর আগের বিভিন্ন কৃত্রিম ত্বকের ওপর চালানো পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এই খাতে বেশ কিছু সংখ্যক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ক্যালটেক)’ এমন এক ধরনের কৃত্রিম ত্বক তৈরি করে, যা বস্তুর তাপমাত্রা ও চাপ অনুধাবনের পাশাপাশি সেটি বিষাক্ত কিছু কি না, তা-ও শনাক্ত করতে পারে।

ওই ত্বকে ব্যবহৃত বিভিন্ন সেন্সরে হাইড্রোজেল যুক্ত করা হয়েছিল, যা ইঙ্কজেট প্রিন্টারের মতোই ত্বকের ওপর মুদ্রণ সম্ভব করে তোলে।

এর বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে নদীর দূষণের উৎস শনাক্ত করা ও সন্দেহজনক লাগেজে বিস্ফোরকের উপস্থিতি ‘টের’ পাওয়া।