যাওয়া ও আসা মিলিয়ে সেদিন আমরা মোট ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলাম।
Published : 22 Apr 2025, 08:40 PM
আমার শখ সাইকেল চালানো। তাই প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাই। আমার বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটারের বেশি নয়। ফলে এই দূরত্বের বেশি কখনো সাইকেল চালিয়ে যাওয়া হয়নি।
এদিকে অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল সাইকেল চালিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাব। কিন্তু, বন্ধুরা এতে রাজি হচ্ছিল না। একা একা দূরের পথ পাড়ি দেওয়াও সম্ভব ছিল না। তো এভাবেই কাটছিল দিন।
একদিন আমাদের শহরের একটি সাইক্লিং ক্লাব সম্পর্কে জানতে পারি। এখানকার সদস্যরা একসঙ্গে সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়ায়।
তাদের সঙ্গে যাওয়া ঠিক হবে কি-না এই নিয়ে কিছুদিন ভাবলাম। তারপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে জানাল যে ভয়ের কিছু নেই। এই ক্লাবের সদস্যরা সবাই বন্ধুর মত। তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে সাইক্লিং করার সিদ্ধান্ত নিই এবং আম্মুকে রাজি করিয়ে ফেলি।
২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ছিল এই ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে আমার প্রথম সাইক্লিং। আমরা সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে খুব ভোরে যাত্রা শুরু করি। গন্তব্য ছিল বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত মরমী কবি ও বাউল শিল্পী হাসন রাজার স্মৃতি বিজড়িত বাংলোবাড়ি।
পথ পাড়ি দিতে দিতে আমরা সূর্যোদয় দেখি, শুনি পাখির কিচির মিচির ডাক। ভোরের মৃদু বাতাস এসে গায়ে লাগছিল। এমন এক মিষ্টি অনুভূতির মধ্য দিয়ে আমরা পথ পাড়ি দিতে থাকি।
প্রথম ১০ কিলোমিটার পথ অনায়াসে পাড়ি দিলেও এরপর পায়ে ব্যথা শুরু হয়। তাই পথ চলার মাঝে মাঝে হালকা বিরতি দিয়ে আমরা এগোতে থাকি।
যাত্রা শুরুর প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আমরা গন্তব্যে পৌঁছাই। পথে আমার সঙ্গীরা নানাভাবে আমাকে সহযোগিতা করে।
আমরা সবাই মিলে হাসন রাজার বাংলোবাড়িটি ঘুরে দেখি। সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে ফিরে আসার যাত্রা শুরু করি।
যাওয়া ও আসা মিলিয়ে সেদিন আমরা মোট ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলাম। এটি আমার প্রথম কোনো দূরের যাত্রা হওয়াতে সতীর্থরা আমাকে অভিনন্দন জানায়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: সিলেট।