চীনা কমিউনিটি পার্টির সমালোচকদের চুপ করানোর জন্য সেন্সরশিপ টুল তৈরিতে বেইজিংয়ের সঙ্গে “হাতে হাত মিলিয়ে” কাজ করেছে মেটা।
Published : 11 Apr 2025, 02:18 PM
সেন্সরশিপ নিয়ে চীনের সঙ্গে কাজ করেছে মেটা– সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্টটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে কোম্পানিটির সাবেক একজন কর্মী।
বুধবার মেটা’র ওই কর্মী মার্কিন সিনেটরদের বলেছেন, চীনে এক হাজার আটশ কোটি ডলারের ব্যবসা গড়ে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছে মেটা।
কংগ্রেসের এক শুনানিতে ফেইসবুকের সাবেক ‘গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর’ সারাহ উইন উইলিয়ামস এমন কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, মেটার নির্বাহীরা কীভাবে তাদের ব্যবহারকারীদের তথ্য, যার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের তথ্যও রয়েছে তাতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন।
উইন উইলিয়ামসের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে মেটা। এ বিষয়ে মেটার মুখপাত্র রায়ান ড্যানিয়েলস বলেছেন, “সারাহ উইন উইলিয়ামসের এমন বক্তব্য বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন ও মিথ্যা দাবিতে ভরা।”
ড্যানিয়েলস বলেন, চীনে তাদের পরিষেবা দিতে কোম্পানির আগ্রহের কথা সবার সামনে বলেছেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।
“আসল কথা হচ্ছে, চীনে আমরা পরিষেবা পরিচালনা করি না।”
তবে মেটা চীনভিত্তিক বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপনের বিনিময়ে আয় করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
সিনেট জুডিশিয়ারি সাবকমিটির সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় উইন উইলিয়ামস আরও অভিযোগ করে বলেছেন, চীনা কমিউনিটি পার্টির সমালোচকদের চুপ করানোর জন্য সেন্সরশিপ টুল তৈরিতে বেইজিংয়ের সঙ্গে “হাতে হাত মিলিয়ে” কাজ করেছে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানিটি।
বিশেষভাবে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত চীনা ভিন্নমতাবলম্বী গুও ওয়েংগুইয়ের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার জন্য চীনের দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছিল মেটা।
“তারা তাদের সমালোচকদের চুপ করাতে চায়– চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এ বিষয়টি জাকারবার্গ মেনে নিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি এমনটা বলতে পারি।”
বুধবার মার্কিন সিনেট সদস্যদের সামনে এ শুনানির নেতৃত্ব দেন মিসৌরির রিপাবলিকান সিনেটর জশ হাওলি। হাওলি বলেছেন, বুধবার ওয়েন উইলিয়ামসের আনা এমন অভিযোগ “ঠেকানোর জন্য একেবারে কিছুই করেনি মেটা”।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কংগ্রেসের এক অগ্নিগর্ভ শুনানিতে জাকারবার্গও সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
ওইসময় মেটা প্রধানের পেছনে সারিতে এমন সব পরিবার বসেছিল যারা সামাজিক মাধ্যমের কনটেন্টের কারণে নিজেদের সন্তানদের ক্ষতির মুখে পড়তে বা আত্মহত্যা করতে দেখেছেন।
ওই সময় সেই পরিবারগুলোর কাছে জাকারবার্গের ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানিয়েছিলেন সিনেটর হাওলি।
জাকারবার্গ ঘুরে দাঁড়িয়ে পরিবারগুলোর উদ্দেশ্যে কেবল বলেছিলেন, তাদের যা হয়েছে, “আর কেউ যেন সেই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে না যায়”।