পুঁজিবাজারে ফের বীমার দাপট, শেয়ারদরের পাশাপাশি বাড়ছে লেনদেন

আগের সপ্তাহেও ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যেত না। চলতি সপ্তাহে কোনো কোম্পানির দর ৩০ শতাংশ, কোনোটির ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দর বেড়েছে। ক্রেতাও ফিরে এসেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 09:52 AM
Updated : 17 May 2023, 09:52 AM

প্রায় দেড় বছর ধরে চলা সংশোধন শেষে পুঁজিবাজারে বীমা খাত ‘স্বরূপে’ ফিরতে শুরু করেছে। তিন বছর আগে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এই খাতটি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের যে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, একই রকম প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যে লেনদেন হয়েছে, তার প্রায় ২৮ শতাংশই হয়েছে এই একটি খাতে। সাধারণ ও জীবন বীমা মিলিয়ে ৫৭টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোট ১৯০ কোটি টাকার শেয়ার।

এর মধ্যে সাধারণ বীমার ৪৩টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর জীবন বীমার ১৪ কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

সাধারণ বীমার ৩৬টি কোম্পানির শেয়ারদরই বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে একটির, আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে পাঁচটি কোম্পানির শেয়ার। জীবন বীমায় বেড়েছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর, দুটি হাতবদল হয়েছে আগের দিনের দরে।

আগের সপ্তাহেও ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যেত না। চলতি সপ্তাহে কোনো কোম্পানির দর ৩০ শতাংশ, কোনোটির ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দর বেড়েছে। ক্রেতাও ফিরে এসেছে।

ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স চার পয়েন্ট বৃদ্ধির দিন শেয়ারদর বেড়েছে ১০৫টি কোম্পানির, বিপরীতে দর হারায় ৬৬টি; আর আগের দিনের দরে হাতবদল হয় ১৮৯টি কোম্পানি। সব মিলিয়ে লেনদেন হয় ৩৬০টি কোম্পানির।

লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৭১১ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকার শেয়ার, আগের দিন যা ছিল ৭৪৪ কোটি টাকার কিছু কম।

বীমায় আগ্রহ ফেরার মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে লেনদেনের শীর্ষে থাকা তথ্য প্রযুক্তি ও খাদ্য খাত পিছিয়ে পড়ছে। এদিন তথ্য প্রযুক্তিতে হাতবদল হয় ৬৮ কোটি টাকার কিছু বেশি; আর খাদ্য খাতে ৬৩ কোটি টাকা। ‘দীর্ঘ ঘুম’ ভেঙে স্বাভাবিক লেনদেনে ফেরার চেষ্টায় থাকা বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটির কাছাকাছি।

দর বৃদ্ধির শীর্ষেও বীমার প্রাধান্য

সবচেয়ে বেশি দর বাড়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টিই বীমা খাতের। শীর্ষ ২০ কোম্পানিতে এই খাতের হিস্যা ১৪টি।

দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে হাতবদল হওয়া আটটি কোম্পানির মধ্যে পাঁচটি বীমা খাতের।

এগুলো হল চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এগুলোর দর বেড়েছে ৯.৫৮ শতাংশ থেকে ৯.৯৮ শতাংশ।

এর মধ্যে মেঘনা ইন্স্যুরেন্স পরপর তিন দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে হাতবদল হল। কদিন আগে ফ্লোর প্রাইস ২৯ টাকা ৯০ পয়সায় শেয়ারের ক্রেতা ছিল না, তিন দিনে দর বেড়ে ৩৯ টাকা ৯০ পয়সাতেও এখন ক্রেতার অভাব নেই।

বীমা খাত ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলো হলো আলহাজ্ব টেক্সটাইলস, ফার কেমিকেলস ও জুন স্পিনার্স।

শীর্ষ দশে থাকা অন্য দুটি কোম্পানি হলো ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ও পেপার প্রসেসিংয়, যেগুলোর দর বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি।

আরও দুটি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, তিনটি করে কোম্পানির দর যথাক্রমে ৬ ও ৫ শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১১টির দর তিন শতাংশের বেশি, ১৭টির দর দুই শতাংশের বেশি, ১৯টির দর এক শতাংশের বেশি বেড়েছে।

সেই জিবিবি এবার পতনের শীর্ষে

জুনে মেয়াদ ফুরাতে থাকার আগের মাসে হঠাৎ করে ফ্লোর প্রাইস ভেঙে ২৩ শতাংশ দর বেড়ে যাওয়া জিবিবি পাওয়ার আবার ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি নেমেছে।

আগের দিন দর ছিল ১৬ টাকা ১০ পয়সা। ৩.১০ শতাংশ কমে দর দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ১৫ টাকা ১০ পয়সা।

এছাড়া লোকসানি খান ব্রাদার্স, বন্ধ থাকা বিডিওয়েল্ডিং, মৌলভিত্তির কোম্পানি মবিল যমুনা, খাদ্য খাদের ফাইন ফুডসের দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।

বস্ত্র খাতের ফারইস্ট নিটিং, এক্সিম ব্যাংক, সোনালী আঁশ, ন্যাশনাল ফিড মিলস, ও জিকিউ বলপেনও ছিল শীর্ষ তালিকায়। এগুলো এক শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে।

আরও ১৫টি কোম্পানি এক শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে।