বড় উত্থানে পতন থামলো

নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার বড় উত্থানে টানা পতন থেমেছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2021, 02:29 PM
Updated : 9 Nov 2021, 02:29 PM

দিন শেষে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ৬৮ পয়েন্ট বেড়েছে। আরও বড় উত্থানের পথে দিনের লেনদেনের এক পর্যায়ে সূচক বেড়েছিল ৮৭ পয়েন্ট পর্যন্ত।

তবে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক পদক্ষেপে তা আর হয়নি। এক দিনের দরবৃদ্ধিতে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতায় শেষের দিকে শেয়ার বিক্রির পরিমাণ বাড়লে সূচকের বৃদ্ধি ৬৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্টেই থেমে যায়। দিন শেষে ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৮৬৮ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট।

একক দিনে এ উত্থান পয়েন্টের হিসাবে গত ১৪ দিনের মধ্যে বেশি। এর আগে এর চেয়ে বেশি বেড়েছিল গত ২৬ অক্টোবর, সেদিন সূচক বেড়েছিল ১২০ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিন রবি ও সোমবার ১০৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ সূচক কমেছিল ঢাকার পুঁজিবাজারে।

এদিন দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২২৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২০ হাজার ৯৭ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।

মঙ্গলবার ঢাকায় সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে। এ বাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ বা ৬৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা কমে ১ হাজার ৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় নেমেছে। আগের কর্মদিবসে যা ছিল ১ হাজার ৭৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

লেনদেনের এ পরিমাণ গত ৬ মাস ১২ দিনের মধ্যে কম। এর আগে এর চেয়ে কম লেনদেন ছিল চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল। সেদিন লেনদেন ছিল ৯৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

এদিন ডিএসইতে ২৬ শতাংশ কোম্পানির দাম কমেছে। এর বিপরীতে ৫৯ শতাংশের দাম বেড়েছে ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ২২৩টির এবং কমেছে ৯৯টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির দর।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৫৪ দশমিক ৮১ পয়েন্টে।

ডিএস৩০ সূচক ৩২ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬১৬ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে।

কোভিড পিল বাজারজাতের খবরে দাম বাড়ল দুই ফার্মার

করোনাভাইরাসের মুখে খাওয়ার ওষুধ বাংলাদেশের বাজারে ছাড়ার খবরে দাম বেড়েছে এ ওষুধ বিক্রির অনুমোদন পাওয়া বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের।

যুক্তরাজ্যে সদ্য অনুমোদন পাওয়া করোনাভাইরাসের মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ দেশে বাজারজাতের অনুমোদন পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে এ দুটি রয়েছে।

এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা ইতোমধ্যে ওষুধ বিক্রি শুরু করেছে। স্কয়ার ফার্মার ওষুধ এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে।

এ খবরে ডিএসইতে আগ্রহের তালিকায় শীর্ষে চলে আসে এ ‍দুই কোম্পানির শেয়ার; দামও বেড়েছে। ওষুধ বাজারজাতের খবরের পাশাপাশি বেশ কিছু দিন পর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার বিষয়টিও এক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছে বলে বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা।

মঙ্গলবার বেক্সিমকো ফার্মার দাম ৪ টাকা ৩০ পয়সা বেড়েছে। আগের দুই দিন এ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছিল। সোমবার সর্বশেষ মূল্য ছিল ২১৯ টাকা ১০ পয়সা, যা মঙ্গলবার দাম বেড়ে ২২৩ টাকা ৪০ পয়সা হয়েছে।

এদিন কোম্পানিটির মোট ১৬ লাখ ৯৩ হাজার ২১টি শেয়ার হাতবদল হয়, যেগুলোর বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ছিল লেনদেনের শীর্ষ তিনে।

অপরদিকে মঙ্গলবার স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের দাম ৩ টাকা ২০ পয়সা বেড়েছে। আগের পাঁচ দিন কমে সোমবার দাম নেমেছিল ২০৯ টাকা ৫০ পয়সায়। মঙ্গলবার সর্বশেষ মূল্য ছিল ২১২ টাকা ৭০ পয়সা।

এদিন স্কয়ার ফার্মার মোট ১৭ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৩টি শেয়ার লেনদেন হয়, যেগুলোর বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৩৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। লেনেদেনের শীর্ষ বিশে অবস্থান ছিল পাঁচ নম্বরে।

লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

বেক্সিমকো লি., ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, জেনেক্স ইনফোসিস, আইএফআইসি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং।

দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ ১০টি

ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, এএফসি এগ্রো, গোল্ডেন সন, তৌফিকা ফুডস, পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, হামিদ ফেব্রিক্স, লাফার্জহোলসিম, প্রাইম টেক্সটাইল ও ওরিয়ন ফার্মা।

বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানি

আজিজ পাইপ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, আমরা নেটওয়ার্ক, জেমিনি সি ফুড, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স, ফার্মা এইডস, আলহাজ টেক্সটাইল ও ইজেনারেশন।

এদিন চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার সিএসইতে ২৬৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৫টির, কমেছে ৮৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দর।

এ বাজারেও সূচক বাড়লেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৩১ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কমেছে।

এদিন মোট ২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৩৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।