এক দিনে ১০৩ পয়েন্ট যোগ ডিএসই সূচকে

লকডাউনের প্রথম দিন ঘুরে দাঁড়ানোর পর দ্বিতীয় দিন বড় উত্থান ঘটেছে দেশের দুই পুঁজিবাজারের সূচকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2021, 12:17 PM
Updated : 6 April 2021, 12:17 PM

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১০৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ২৮১ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট হয়েছে।

আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৯৭ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ২৬১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট হয়েছে।

লকডাউন শুরুর আগের দিন গত রোববার ডিএসই সূচকে গত সাড়ে ১২ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হয়। সেদিন ডিএসইএক্স ১৮১ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে যায়।

পরের দুই দিনে, অর্থাৎ সোম এবং মঙ্গলবার মিলিয়ে ডিএসই সূচকে মোট ১৯২ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিনিয়োগকারীরা ভয়ে ছিল যে লকডাউন হলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বন্ধ হয়ে যাবে। তা না হওয়ায় ভয় কেটে গেছে, সূচকও বাড়ছে। তাছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা মার্জিন ঋণের নিয়মে পরিবর্তন এনেছে, এরও একটি প্রভাব রয়েছে।”

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত রোববার মার্জিন ঋণের নিয়মে যে পরিবর্তন এনেছে, তাতে পুঁজিবাজারে ঋণ প্রবাহ বাড়বে।

নতুন নিয়মে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে থাকলে বিনিয়োগকারীরা ১ টাকা বিনিয়োগের বিপরিতে ৮০ পয়সা মার্জিন ঋণ পাবেন।

আর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের উপরে থাকলে বিনিয়োগকারীরা ১ টাকা বিনিয়োগের বিপরিতে ৫০ পয়সা মার্জিন ঋণ পাবেন।

বর্তমান নিয়েমে ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে থাকলে বিনিয়োগের অনুপাতে ৭৫ শতাংশ ঋণ নেওয়া যায়। অর্থাৎ, কারও ১ টাকার বিনিয়োগ থাকলে তিনি শেয়ার কিনতে আরও ৭৫ পয়সা ঋণ নিতে পারেন।

দ্বিতীয় ধাপে ডিএসইএক্স ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ৫০ শতাংশ এবং তৃতীয় ধাপে ডিএসইএক্স ৭ হাজার পয়েন্টের উপরে থাকলে বিনিয়োগের ২৫ শতাংশ মার্জিন ঋণ পাওয়া যায়।

সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় ৫০৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের কর্মদিবসের চেয়ে ২৭২ কোটি টাকা বেশি।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে ২৪০টির দর বেড়েছে, ১৫টির কমেছে এবং ৯১টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২১ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২০৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট হয়েছে। আর ডিএস৩০ সূচক ৪৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৮৮ দশমিক ২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ঢাকার পুঁজিবাজারে এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানি হল- বেক্সিমকো, রবি, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্সুরেন্স, লংকাবাংলা, বেক্সিমকো ফার্মা, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, সামিট পাওয়ার, লাফার্জ এবং দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।

দাম বাড়ার তালিকার শীর্ষ ১০ কোম্পানি হল- ইসলামী ইন্সুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেড, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০ কোম্পানি হল- মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স, এসিআই ফর্মুলেশনস, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া, ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ এবং পূবালী ব্যাংক।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মঙ্গলবার ১৫০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৩৪ কোটি টাকা বেশি।

সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে ১৪৬টির দর বেড়েছে, ১২টির কমেছে এবং ৩০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

লকডাউনের কারণে এখন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা লেনদেন হচ্ছে পুঁজিবাজারে।