লেনদেনের শীর্ষে স্কয়ার ফার্মা

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের কদর বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2019, 03:18 PM
Updated : 27 June 2019, 03:23 PM

বৃহস্পতিবার প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার।

ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত এই শেয়ার এদিন লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ২০ লাখ। ঢাকার পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের ৫ শতাংশ ছিল স্কয়ারের দখলে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসানি এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফার ডটকমকে বলেন, স্কয়ার ফার্মা একটি ভাল শেয়ার। শেয়ারটি অনেক দিন কম দামে লেনদেন হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব বছর শেষ হবে জুনে।

“বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ নিয়ে স্পেকুলেশন শুরু করেছে। সামনে ভাল লভ্যাংশ আসবে এই আশায় বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ার কিনছে।”

বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা স্কয়ার ফার্মাকে সবসময় একটি আদর্শ বিনিয়োগযোগ্য শেয়ার হিসেবে বলে থাকেন।

খুব ভাল ব্যবসা করে বলে কোম্পানিটির অনেক বছরের সুনাম আছে। পাশাপাশি তারা বিনিয়োগকারীদের সবসময় ভাল লভ্যাংশ দেয়ার চেষ্টা করে থাকে।

এবছর শেয়ারটি ২৯৫ টাকাতেও লেনদেন হয়েছে। সারা জুন মাসে শেয়ারটি ২৫৫ এর ঘরে লেনদেন হলেও গত ছয় দিন ধরে এর সমাপনী মূল্য ছিল ২৬০ টাকার উপরে।

বৃহস্পতিবার শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ২৬৩ টাকা ৫০ পয়সা।

মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতি এই তিন দিনে শেয়ারটির লেনদেন ছিল যথাক্রমে ১০ কোটি, ১১ কোটি এবং ২৬ কোটি টাকা।

অর্থাৎ দামের সাথে সাথে এর লেনদেনও বাড়ছে।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা বলেন,  যখন কোন শেয়ারের দাম এবং লেনদেন একসাথে বাড়ে তখন বুঝতে হবে শেয়ারটির ভাল চাহিদা আছে বাজারে।

তবে যে কোন শেয়ারে বিনেয়োগ করার আগে ভালভাবে জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন  পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মোহাম্মদ এমরান হাসানি।

তিনি বলেন, স্কয়ার ফার্মার পিই এখন ১৬ দশমিক ৫৭। হিসাব করে দেখতে হবে যে, এর ব্যবসা বৃদ্ধির হার কত? তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।

পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম বেশি না কম সেটা বুঝতে পৃথিবীতে অনেক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে পিইজি রেশিও বা প্রাইস/আরনিংস টু গ্রোথ রেশিও।

এটি বের করা হয় কোন কোম্পানির পিই রেশিওকে তার শেয়ার প্রতি মুনাফার প্রবৃদ্ধি কে দিয়ে ভাগ দিয়ে। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় খেয়াল রাখতে হয় যে পিইজি রেশিও এর ফলাফল ১ হয় কিনা ।

অর্থাৎ পিইজি রেশিও ১ মানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম আদর্শ অবস্থানে আছে। ১ এর কম হলে শেয়ারের দাম যা হওয়ার কথা তারচেয়ে কম মূল্যে লেনদেন হচ্ছে। আর ১ এর বেশি হলে শেয়ারটির দাম যা হওয়ার কথা তারচেয়ে বেশি আছে।

পিইজি ১ এর কম অবস্থায় শেয়ার কিনে ১ এর বেশি হলে বিক্রি করে দেয়া ভাল। আর পিইজি দিয়ে শেয়ারের দাম নির্ধারনের মূল বিষয়টি হলো যে, একটি কোম্পানির মুনাফা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার পিই তাই হওয়া উচিৎ।   

স্কয়ার ফার্মার ১৭ থেকে ১৮ সালে মুনাফার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ।

তবে ২০১৯ সালের প্রবৃদ্ধির হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি মুনাফা দেখিয়েছে ৯৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ১২ মাসে তাদের মুনাফা হওয়ার কথা ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকার মত।

গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকা।

সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ ঋনাত্বক (-)। কিন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের পিই ১৬ এর উপরে।

এ হিসাবে স্কয়ার ফার্মার পিইজি ঋণাত্বক (-) । অর্থাৎ কোম্পানিটির মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে নেই; কমে গেছে ।

সে হিসাবে বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার একটু বেশি দামেই লেনদেন হচ্ছে।