ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার

অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সম্ভাবনায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে দরপতনের ধারায় থাকা দেশের পুঁজিবাজার।

রিয়াজুল বাশারও ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2018, 11:44 AM
Updated : 30 Oct 2018, 11:45 AM

সোম ও মঙ্গলবার দুই কাযদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক দশমিক ৬৬ শতাংশ বা ৮৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেঁড়ে হয়েছে ৫২৯৯ পয়েন্ট।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর ১০ কাযদিবসে ডিএসইএক্স ৫৪৪৬ পয়েন্ট থেকে চার দশমিক ২৯ শতাংশ বা ২৩৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে ৫২১২ পয়েন্টে নেমে আসে।

বাজারের ইতিবাচক সূচকের বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার যে সংলাপের আগ্রহ প্রকাশ করায় নির্বাচনের আগে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ বজাই থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংলাপপ্রত্যাশী কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে নির্বাচনে আগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে দেশের পুঁজিবারের সূচকেও ধ্বস নেমেছিল।  

বাজারে সূচকের ঊর্ধ্বগতির পেছনে সংলাপ ছাড়াও অর্থপ্রবাহ বাড়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন ডিএসইর পরিচালক রবিকুর রহমান।

“আইসিবির প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা কিছু দিনের মধ্যেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আসবে। আর চীনের কাছ থেকে আসা ৯০০ কোটি টাকা আমরা কাল (বুধবার) থেকে ব্রোকারদের দেওয়া শুরু করব।

“সংলাপ, আইসিবির বিনিয়োগ এবং ডিএসইর ব্রোকারদের সম্ভব্য বিনিয়োগ-এই তিনটি বিষয় নিয়েই পুঁজিবাজার একটি ইতিবাচক প্রভাবে আছে।”

ডিমিউচুয়ালাইজেশন সম্পন্ন হওয়ার পর শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত অংশীদার করেছে ডিএসই। ওই কনসোর্টিয়ামের কাছে ডিএসই তার প্রায় ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে ৯০০ কোটি টাকায়। ব্রোকারদের ওই অর্থ বুধবার থেকে বাজারে ছাড়া শুরু হবে। আর ৭৫ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিসি বন্ড থেকে বাজার থেকে দুই হাজার কোটি উত্তোলন করছে। শিগগিরিই এ অর্থও বাজারে ঢ়ুকবে।  

এসব নগদ অর্থ বাজারে প্রবেশ করলে তারল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজার ‘গরম’ হয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্ঠদের ধারণা।

অক্টোবর শুরু থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা ও তারল্যের অভাবে ধুঁকতে শুরু করে পুঁজিবাজার। এর মধ্যেই জুনে অর্থবছর শেষ হওয়া অনেক কোম্পানি ভাল লভ্যাংশ দিয়েও দর হারিয়েছে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, “পুঁজিবাজার যখন ভাল থাকে তখন লভ্যাংশ ঘোষণা দিলে বাজার ভাল হয়। কিন্তু পুঁজিবাজার যখন খারাপ থাকে বিনিয়োগকারীরা সাইডলাইনে বসা থাকে। আর্থিক সংকটের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষা পুঁজিবাজারকে খারাপ অবস্থায় ফেলেছিল।

“সংলাপের খবর আপাতত একটি ভাল প্রভাব ফেলেছে।”

মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১০৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বেশি।

লেনদেনে অংশ নেয় ৩৩৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৩১টির, কমেছে ৭৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির।

দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৩০ কোটি  ১৯ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

লেনদেনে থাকা ২৪০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৬টির, কমেছে ৪৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির দর।

দিন শেষে সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই প্রায় ১৮০ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ২২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।