বিদেশিদের লেনদেন বৃদ্ধিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসইর হিসাবে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ঢাকার পুঁজিবাজারে বিদেশিরা লেনদেন করেছে আট হাজর ৪২৭ কোটি টাকার; যা বাজারের মোট লেনদেনের প্রায় পাঁচ শতাংশ।
২০১০ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধস শুরু হয় পুঁজিবাজারে। ওই ধস সামলে পুঁজিবাজারকে আবার টেনে তুলতে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে নানা প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে প্রতিষ্ঠিানিক বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য কর মওকুফসহ বেশ কয়েকটি প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এরপর থেকে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ও লেনদেন বাড়তে শুরু করে।
২০১৫ সালে বিদেশিরা লেনদেন করেছিল সাত হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, ২০১৬ সালে আট হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা এবং চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে লেনদেন দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৪২৭ কোটি টাকা।
ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, “তার মানে, বাজার বড় হচ্ছে এবং সেখানে বিদেশিদের অংশগ্রহণও বাড়ছে। বাজার যত বড় হবে বিনিয়োগকারীদের জন্য তত ভালো হবে। কারণ বাজার বড় হলে তার নিয়ন্ত্রণ কোনো একক গোষ্ঠী বা ব্যক্তির হাতে থাকার সুযোগ থাকবে না।”
লেনদেন বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে বিদেশি প্রকৃত বিনিয়োগও। বিদেশিরা শেয়ার বিক্রির চেয়ে কিনছেন বেশি।
২০১৬ সালে বিদেশিদের প্রকৃত বিনিয়োগের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩৪০ কোটি টাকা এবং চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে প্রকৃত বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা।
তার মানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার বিমুখ না হয়ে লেনদেন বাড়ানোয় প্রকৃত বিনিয়োগও বাড়াচ্ছে।
“এর ফলে তারল্য বাড়ে, প্রাইস ডিসকভারি হয়, ভ্যালু ইনভেস্টমেন্ট হয়, ভালো শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি পায় এবং একটা ডিসিপ্লিন (পরিচ্ছন্ন) বিনিয়োগ হয়।”
গত প্রায় আড়াই বছর বাজারের সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৫ সালের চার মে ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৩৯৫৯ পয়েন্ট। ওইদিন লেনদেন হয় ৩৩০ কোটি টাকা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স সূচক পৌঁছায় ৬২৪০ পয়েন্টে। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি লেনদেন হয় দুই ১৮০ কোটি টাকা।
২০১৫ সালের চার মে ডিএসইর দুই লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন হয়েছে চার লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা।
তবে বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের ঝুঁকির কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্ট এ দুজন।
মনিরুজ্জামান বলেন, “পুঁজিবাজারে বাবল হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বের হয়ে যায়।”
এজন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রবেশে বাজারে দীর্ঘমেয়াদের সুবিধা নেওয়ার পরামর্শ দেন শাকিল রিজভী।
তার মতে, এই সুযোগে বাজারে ভালো শেয়ারের প্রবাহ বাড়িয়ে ‘বাবল’ ঠেকানো এবং বাজার মূলধন বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বহুজাতিক কোম্পানি, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্সুরেন্স, টেক্সটাইল ও প্রকৌশলসহ বিভিন্ন খাতের ভাল মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।