Published : 15 Jul 2024, 06:17 PM
চলতি অর্থবছরে টানা ছয় কর্মদিবস উত্থানের পর তিন দরপতন শেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। দিনের লেনদেন দেখে বিনিয়োগকারীরা সংশোধন কেটে যাওয়ার আশা করছেন।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২ পয়েন্ট, যদিও এক সময় ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল।
দিনের প্রথম ভাগে শেয়ার দর বৃদ্ধি পাওয়া প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো দর হারিয়েছে শেষ বেলায়। এতে লেনদেনে আসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর হারায় ১৯১টি, বৃদ্ধি পায় ১৪০টির ও আগের দরে লেনদেন করছে ৬৬টি।
এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের ১০ দিনে ৭ দিন বেড়ে এবং তিন দিন কমে ডিএসইএক্স সূচকে যোগ হল ১৫৬ পয়েন্ট।
ডিএসইএক্সের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য দুই সূচকও ইতিবাচক দেখা গেছে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দিনভর উঠানামা করলেও শেষ মুহূর্তে আগের দিনের জায়গায় অবস্থান করছে। আর ‘সেরা’ ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৭ পয়েন্ট।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘সূচকে বেশি উত্থান পতন হয়নি আজ। এর মানে বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন। আগামীতে লেনদেন ও সূচক আরো ইতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।’’
বিনিয়োগকারী হাসিবুর রহমান বলেন, ‘‘গত তিন দিন দর সংশোধন হয়, আজকে বাজার আরো বেশি লেনদেন ও সূচক বৃদ্ধি পাওয়া দরকার ছিল। তা না হলেও লক্ষণ ভালো গেল, অন্তত সূচক বাড়তে শুরু করেছে। মনে হচ্ছে, এখন আবার বাড়বে।’’
লেনদেনের এক চতুর্থাংশ প্রকৌশল খাতে
লেনদেনের প্রায় ২৫ শতাংশ হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের তালিকাভুক্ত ৩৩টি কোম্পানিতে, এটি গত ১০ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের ১০ দিনে ডিএসইর মোট লেনদেনে ১৬ থেকে ১৯ শতাংশের মধ্যে ছিল এ খাতের অবদান। এই খাতের ১৯ টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে ১৩টির।
দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত ও তৃতীয় হয় বস্ত্র খাত, যে দুটিতে ১০ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে।
খাদ্য খাদের ৭টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ২৪টির, বস্ত্রখাতের ৫৮টির কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ২৬টি, বেড়েছে ২৩টি।
একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে তিন বহুজাতিক রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভারস ও ম্যারিকো।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে যেসব কোম্পানি
দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা বা সার্কিট ব্রেকার ১০ শতাংশের কাছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ দর বেড়েছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড।
আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৪ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে সবশেষ লেনদেন হয় ৪৯ টাকা ৮০ পয়সায়। দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা ২ টাকা ৬০ পয়সা বেড়েছে।
এরপরই ফার ইস্ট নিটিংয়ের শেয়ারদর বেড়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর শীর্ষ দশে ছিল ওয়ালটন হাইটেক, ওরিয়ন ইনফিউশন, ফার কেমিক্যাল, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, সেন্ট্রাল ফার্মা, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড।
সব মিলিয়ে দুটি কোম্পানির দর ১০ শতাংশের কাছাকাছি, চারটির দর ৭ শতাংশের বেশি, দুটির দর ৬ শতাংশের বেশি একটির ৫ শতাংশ, আটটির দর ৪ শতাংশের বেশি, চারটির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২৫টির দর বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি।
পতনের শীর্ষে যারা
শেয়ার প্রতি ১৫ টাকা ৪০ পয়সা অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণার পর গত ২০ জুন এক দিনেই লিনডে বিডির শেয়ারদর ৪৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। ৯৮৫ টাকা ৩০ পয়সা থেকে দর উঠে গিয়েছিল ১ হাজার ৪০৯ টাকা ৪০ পয়সায়।
এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ৩ শতাংশ ছুঁয়ে দর কমছে কোম্পানিটির শেয়ারের। প্রায় প্রতিদিনই দরপতনের সর্বোচ্চ সীমায় থাকছে কোম্পানিটি। এখন দর স্থির হয়েছে ১০৮০ টাকা ১০ পয়সায়।
যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই এই সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে হারিয়েছে। এই শীর্ষ তালিকায় ছিল যথাক্রমে সালভো কেমিক্যাল, বিচ হ্যাচারি, ওয়াইমেক্স ইলেকট্রোড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন কোম্পানি, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ইজেনারেশন, গোল্ডেনসন, জুন স্পিনার্স, গোল্ডেনসন, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।
শীর্ষ ১০ ছাড়া আরো ৪৩টি কোম্পানি ২ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে।