চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কর্মদিবসে দরপতনের পর বুধবার শুরুতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল।
Published : 31 Jul 2024, 06:34 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে সহিংসতার মধ্যে জারি করা কারফিউ চলাকালে পূর্ণদিবস অফিস চালু হওয়ার প্রথম দিন পতনের ধাক্কা সামলে ইতিবাচক প্রবণতায় ফিরল পুঁজিবাজার।
বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন। যতগুলো কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে, বেড়েছে তার চেয়ে বেশি সংখ্যক কোম্পানির।
তবে লেনদেন এখনও ৫০০ কোটি টাকার নিচে আর এমনিতেই অবমূল্যায়িত থাকা বহু কোম্পানির শেয়ারদর আরও কমায় বোঝা যায়, বিনিয়োগকারীরা এখনও পুরোপুরি সক্রিয় না হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আছেন।
চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কর্মদিবস দরপতনের পর বুধবার শুরুতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল। তবে দিনের বাকি সময়ে সেখান থেকে ৪১ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ হয় লেনদেন।
১৭১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে ১৬৩টির দর কমে এবং আগের দিনের দরে লেনদেন শেষ করে ৬৩টি প্রতিষ্ঠান।
সারাদিনে হাতবদল হয় ৪৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, আগের দিন যা ছিল ৪৩২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৮ জুলাই সংঘাতে প্রাণহানির পর ২১ থেকে ২৩ জুলাই কারফিউয়ের মধ্যে লেনদেন বন্ধ ছিল পুঁজিবাজারে।
কারফিউ কিছুটা শিথিল হলে ২৪ জুলাই অফিস খোলে। তবে এরপর থেকে পাঁচ কর্মদিবসে লেনদেন হয় সীমিত পরিসরে। প্রথম দুই দিন বেলা ১১টা থেকে ২টা এবং রবি থেকে মঙ্গলবার ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলে শেয়ার কেনা-বেচা।
এই পাঁচ দিনে সূচক কমে প্রায় দেড়শ পয়েন্ট।
আগের দিন ৬০ পয়েন্ট হারানোর স্মৃতি নিয় বুধবার লেনদেনের শুরুতে শঙ্কা ছিল কেটে যায়। ১৯ মিনিটে সূচকে যোগ হয় ৫১ পয়েন্ট। তবে পরে সেখান থেকে ৬৫ পয়েন্ট হারিয়ে সাড়ে ১২টার দিকে সূচক কমে যায় আগের দিনের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট।
এর পরে ক্রয় চাপ কিছুটা বাড়লে ইতিবাচক প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন।
সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সের পাশাপাশি শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২ পয়েন্ট এবং ‘সেরা’ ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
গত এক মাসের ধারাবাহিকতায় এদিনও লেনদেনে শীর্ষে অবস্থান ধরে রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত।
লেনদেনের ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ অবদান রেখে খাতটির মোট ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ১৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬ টির।
লেনদেনের ১২ শতাংশ হিস্যা নিয়ে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এরপরই ছিল বস্ত্র ও ব্যাংক খাতের শেয়ার।
দর বৃদ্ধির সার্কিট ব্রেকার ছুঁতে পারেনি কোনো কোম্পানি
সার্কিট ব্রেকার বা একদিনে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ দর বাড়েনি কোনো কোম্পানির। সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ দর বেড়েছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ারের। দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ স্থানে থাকা পাঁচটি কোম্পানির দরই বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
এগুলো হল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস, সোনালী লাইফ ও ওয়ান ব্যাংক।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে থাকা বাকি চারটি কোম্পানি হল কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, ইন্দোবাংলা ফার্মা, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এগুলোর পর ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
পতনের তালিকায় শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো তার পতনের সর্বোচ্চ সীমা ৩ শতাংশের কাছাকাছি দর হারিয়েছে।
কোম্পানিগুলো হল খান ব্রাদার্স, পি পার্ল, সিএপিএমবিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড, এডিএন টেলিকম, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফার্স্ট প্রাইম ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স।