পোল্যান্ড কোচ চেসলাভ মিকনিয়েভিচের বিশ্বাস, সামনেই বিশ্ব মঞ্চে গোলের খাতা খুলবেন এই তারকা।
Published : 23 Nov 2022, 03:10 PM
ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে গত কয়েক বছর ধরে গোলের স্রোত বইয়ে চলেছেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। কিন্তু বিশ্বকাপে সেই তিনিই এখন পর্যন্ত খুলতে পারেননি গোলের খাতা! অপ্রাপ্তি ঘোচানোর সুবর্ণ সুযোগ পান কাতার আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই। পোল্যান্ড অধিনায়ক সেটাও হাতছাড়া করলেন, স্পট-কিকে ব্যর্থ হয়ে।
লেভানদোভস্কির পেনাল্টি মিসে জেতার সুযোগও হাতছাড়া করেছে পোল্যান্ড। মঙ্গলবার মেক্সিকোর বিপক্ষে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। তারকা স্ট্রাইকারের ব্যর্থতায় হতাশ নন দলটির কোচ চেসলাভ মিকনিয়েভিচ। তার বিশ্বাস, বৈশ্বিক আসরে লেভানদোভস্কির গোল এই এলো বলে।
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হওয়া লেভানদোভস্কিকে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে অপেক্ষা করতে হয় ২০১৮ আসর পর্যন্ত। কারণ ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি পোল্যান্ড।
রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপে তিন ম্যাচ খেলে জালের দেখা পাননি একবারও তিনি। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া পোল্যান্ড গোল করেছিল মোটে দুটি।
গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে বায়ার্ন মিউনিখে অনেক রেকর্ড গড়া লেভানদোভস্কি এই মৌসুমের শুরুতে যোগ দেন বার্সেলোনায়। কাতালান ক্লাবটির হয়ে ৩৪ বছর বয়সী তারকা বিশ্বকাপ বিরতির আগে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৯ ম্যাচে গোল করেন ১৮টি। এই সময়ে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে তার চেয়ে বেশি গোল কেবল আর্লিং হলান্ড (২৩) ও কিলিয়ান এমবাপের (১৯ গোল)।
পোল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা (১৩৪ ম্যাচে ৭৬ গোল) লেভানদোভস্কি এই বিশ্বকাপের বাছাইয়ে ৯টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করান ৪টি। কাতার আসর শুরু করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড বিশ্বকাপে গোলের খাতা খোলার লক্ষ্য নিয়ে।
সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান লেভানদোভস্কি প্রথম ম্যাচেই। মেক্সিকোর বিপক্ষে ৫৮ মিনিটে স্পট-কিক নিতে যান তিনি। কিন্তু বাঁদিকে ঝাপিয়ে বল ঠেকিয়ে দেন গিয়েরমো ওচোয়া। অপেক্ষা আর ফুরায়নি পোলিশ স্ট্রাইকারের।
ম্যাচের পর পোল্যান্ড কোচ মিকনিয়েভিচ বললেন, ফুটবলে এমন অহরহই ঘটে।
“ফুটবলে এমনটা ঘটে। আমি যতটুকু মনে পড়ে, বড় টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলোয়াড়রা গোল করেনি। জিকো, সক্রেটিস, প্লাতিনি, ম্যারাডোনা-সেই চ্যাম্পিয়নশিপের কথা আমার মনে আছে - তবে আরও অনেক দুর্দান্ত ফুটবলারও আছে।”
এমন সুযোগ নষ্ট করে লেভানদোভস্কি ভীষণ হতাশ বলে জানান মিকনিয়েভিচ।
“ওই পরিস্থিতিতে সে হতাশ ছিল… ড্রেসিংরুমে একটি স্ক্রিন ছিল যেখানে ম্যাচের রিপ্লে এবং অন্যান্য পরিস্থিতির সঙ্গে পেনাল্টি কিকটিও দেখানো হয়। রবের্ত সেটা দেখে, পর্যালোচনা করে।”
“আমি তাকে বলেছি, তার জন খুবই খারাপ লাগছে। কারণ আমি জানি, একজন অধিনায়ক কেমন অনুভব করে যখন সে এমন একটি ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হন, যেটায় তারা জিততে পারেনি।”
অনুশীলনে স্পট কিকের অনেক প্রস্তুতি নিয়েছেন লেভানদোভস্কি। কিন্তু ম্যাচে সেটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। মিকনিয়েভিচ মনে করেন, সামনে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারবেন তার শিষ্য।
“আমাদের গোলরক্ষকের বিপক্ষে সে যতগুলো স্পট-কিক নিয়েছিল, সবই গোল হয়েছিল। তাকেই এটা হজম করতে হবে… এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলাতে হয় তার সেটা ভালো জানা। কোচ হিসেবে, দল হিসেবে, আমরা তাকে সমর্থন করব। আমি জানি, সে এখনও এই টুর্নামেন্টে আমাদের অনেক সাহায্য করবে।”
“আশা করি, সামনের সুযোগগুলোকে সে গোলে পরিণত করতে পারবে।”
পোল্যান্ডের পরের ম্যাচ সৌদি আরবের বিপক্ষে আগামী শনিবার।