ব্রাজিলের উদযাপনে ছুড়ে দেওয়া হলো কলা, রিশার্লিসনের ক্ষোভ

বর্ণবাদের কঠোর শাস্তি দাবি করলেন রিশার্লিসন, একই দাবি ব্রাজিলের ফুটবল সংস্থার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 07:52 AM
Updated : 28 Sept 2022, 07:52 AM

গোল করে তখন উদযাপনে ব্যস্ত রিশার্লিসন। তাকে ঘিরে দলের অন্যরা। চলছিল পরস্পরকে আলিঙ্গনে জড়ানো আর পিঠ চাপড়ে দেওয়া। তাদের দিকে প্লাস্টিকের খালি বোতল, কাগজের টুকরা ছুড়ে দেওয়া হচ্ছিল গ্যালারি থেকে। উদযাপনের শেষ দিকে তাদের দিকে ছুটে যায় একটি কলা। রিশার্লিসনের ঠিক পাশে গিয়ে পড়ে সেই কলা। ইঙ্গিতটি স্পষ্ট। ম্যাচ শেষে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানায় ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ও রিশার্লিসন।

প্যারিসে মঙ্গলবার তিউনিসিয়ার বিপক্ষে এই প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিল জয় পায় ৫-১ গোলে। ম্যাচে যখন ১-১ সমতা, ১৯তম মিনিটে গোল করে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন রিশার্লিসন।

গোল করে তিনি উচ্ছ্বাসে কর্নার ফ্ল্যাগের দিকে ছুটে গিয়ে স্লাইড করেন মাঠে। ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন রাফিনিয়া। এরপর অন্যরাও যোগ দেন উদযাপনে। শেষ দিকে গ্যালারির দিকে তাকিয়ে উদযাপন করছিলেন রিশার্লিসন। তখনই তার দিকে ছুড়ে দেওয়া হয় একটি কলা। তার ঠিক পাশে গিয়ে পড়লেও তিনি তা পাত্তা না দিয়ে চলে যান।

তবে ম্যাচ শেষে এটা তুমুল আলোচনার জন্ম। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাও উঠে আসে আবার। সম্প্রতি রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়রের বর্ণবাদের শিকার হওয়া নিয়ে সোচ্চার ছিলেন ব্রাজিলের বর্তমান-সাবেক ফুটবলারদের অনেকেই।

ভিনিসিউসের উদযাপন নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পেদ্রো ব্রাভো টিভিতে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, গোল উদযাপনে ‘বানরের মতো আচরণ’ বন্ধ করতে হবে। তার সেই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচেও বর্ণবাদের শিকার হন ভিনিসিউস। তাকে নিয়ে বর্ণবাদী গান করেন আতলেতিকো সমর্থকরা।

এরপর এবার কলা ছুড়ে দেওয়ার এই ঘটনা। এছাড়াও এই ম্যাচে বারবার লেজার তাক করা হয় ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের দিকে। খেলা তাতে থেমেও যায় দুই দফায়।

ম্যাচের পর এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সিবিএফ বিবৃতিতে জানায়, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলতে থাকবে। সংস্থার প্রধান এদনালদো রদ্রিগেস বলেন, বর্ণবাদের কঠোর শাস্তি না হওয়াতেই এসব বন্ধ হচ্ছে না।

“ফুটবলে বর্ণবাদের আরেকটি অধ্যায় চরমভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হলো। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধু কোনো নিমিত্ত নয়, বরং বিশ্ব থেকে এই ধরনের অপরাধ মুছে ফেরার চেষ্টা। আমি জোর দিয়ে দাবি জানাতে চাই যে আরও কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

একই কথা ছিল রিশার্লিসনের কণ্ঠেও।

“যতদিন পর্যন্ত তারা স্রেফ হাবিজাবি বলে এসব পাশ কাটিয়ে যাবে এবং শাস্তি দেবে না, ততদিন এসব হতেই থাকবে। দুনিয়ার সব প্রান্তে প্রতিদিন এসব হচ্ছে।”