উয়েফা নেশন্স লিগ
নেশন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল বেলজিয়ামের, টানা তৃতীয় জয়ে সেই সম্ভাবনা উজ্জ্বল করল ফ্রান্স।
Published : 15 Oct 2024, 02:48 AM
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে লড়াই হলো দারুণ। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪৩ বছরের জয়-খরা কাটানোর লক্ষ্যে নেমে শুরুতে পেনাল্টি মিস করে বসলেন বেলজিয়াম অধিনায়ক ইউরি টিলেমানস। রন্দাল কোলো মুয়ানির জোড়া গোলে ফের জিতল ফ্রান্স।
ব্রাসেলসে সোমবার রাতে উয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে দিদিয়ে দেশমের দল।
টিলেমানসের পেনাল্টি মিসের পর কোলো মুয়ানির পেনাল্টি গোলেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। প্রথমার্ধেই সমতা টানেন লোইস ওপেন্দা। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান গড়ে দেন কোলো মুয়ানি।
মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ায় শেষ ১৪ মিনিট একজন কম নিয়ে খেলতে হয় ফ্রান্সকে, সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি বেলজিয়াম।
পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ২০টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখতে পারে স্বাগতিকরা। আর ফ্রান্সের ১৪ শটের ৪টি লক্ষ্যে ছিল।
একই সময়ে ‘এ’ লিগের দুই নম্বর গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইসরায়েলের বিপক্ষে ৪-১ গোলের অনায়াস জয় পেয়েছে ইতালি।
প্রতিযোগিতাটির কোয়ার্টার-ফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল বেলজিয়ামের।
৪ ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ইতালি। হারে শুরুর পর টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ফ্রান্স। একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বেলজিয়াম। চার ম্যাচেই হেরে তলানিতে ইসরায়েল।
গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে কোয়ার্টার-ফাইনালে। বেলজিয়াম শেষ দুটি ম্যাচ খেলবে ইতালি ও ইসরায়েলের বিপক্ষে।
গত মাসে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ফ্রান্স। দুই দলের সবশেষ পাঁচ দেখায় সবগুলোই জিতল ফরাসিরা।
ম্যাচের শুরুর দিকে আক্রমণে আধিপত্য করা বেলজিয়াম প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় ত্রয়োদশ মিনিটে। ডান দিক থেকে টিলেমানসের পাসে বক্সে ওপেন্দার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। চার মিনিট পর বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে লেয়ান্দ্রো ত্রোসারের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক মাইক মিয়াঁ।
একটু পর মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া ওপেন্দাকে ফেলে দেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবা। লাইন্সম্যান শুরুতে অফসাইডের পতাকা তুললেও, ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু উড়িয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন টিলেমানস।
২৫তম মিনিটে প্রথমবার বেলজিয়াম গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারে ফ্রান্স। বার্কোলার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন কোয়েন কাস্তেলস।
৩৩তম মিনিটে বেলজিয়ামের বক্সে জটলার ভেতর মাটিতে পড়ে যাওয়া ডিফেন্ডার ভাউট ফাসের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কাস্তেলসকে ফাঁকি দিয়ে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেন পিএসজির ফরোয়ার্ড কোলো মুয়ানি।
প্রথমার্ধের চার মিনিট যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে সমতায় ফেরে বেলজিয়াম। টিমোটি কাস্টানিয়ার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে বল জালে পাঠান ওপেন্দা। লাইন্সম্যান প্রথমে অফসাইডের পতাকা তুললেও, ভিএআরের সাহায্যে গোল দেন রেফারি।
৫২তম মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে বল ধরে এগিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েক জনের বাধা এড়িয়ে শট নেন উসমান দেম্বেলে, পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায় বল। ৫৮তম মিনিটে মানু কোনে বেলজিয়ামের জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতলেও, বিল্ড-আপের সময় কোলো মুয়ানির হাতে বল লাগায় হ্যান্ডবল ধরেন রেফারি।
তিন মিনিট পরই অবশ্য নিজের দ্বিতীয় গোলে ফের ফ্রান্সকে এগিয়ে নেন কোলো মুয়ানি। লুকা দিনিয়ের ক্রসে বক্সে লাফিয়ে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
এই বছরে জাতীয় দলের হয়ে তার ষষ্ঠ গোল এটি।
৬৫তম মিনিটে মিয়াঁর নৈপুণ্যে বেঁচে যায় ফ্রান্স। বক্সের বাইরে থেকে জিনো দেবাস্তের বুলেট গতির শট ঠেকান এসি মিলান গোলরক্ষক।
৭৬তম মিনিটে নিজেদের বক্সের ঠিক বাইরে টিলেমানসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন এই মাসের দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব পাওয়া চুয়ামেনি। ওই ফ্রি-কিকে ত্রোসারের শট ফিরিয়ে দেন মিয়াঁ।
বাকি সময়ে বেলজিয়াম চাপ বাড়ালেও সমতা ফেরানো গোলের দেখা পায়নি। ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে ফ্রান্সের বিপক্ষে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে তারা জয়ের দেখা পায়নি।