তৃতীয় কোয়ার্টারে এক ঘটনা নিয়ে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা শেষ পর্যন্ত কাটলই না। তাতে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগের শিরোপা নিষ্পত্তিও আপাতত ঝুলে থাকল।
Published : 19 Apr 2024, 08:31 PM
কার্ডের খাড়ায় অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি খেলতে পারবে না- এই ইস্যুতে মোহামেডান খেলবে কিনা, তা নিয়েই ছিল সংশয়। অবশেষে মোহামেডান খেলতে এলো। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দারুণভাগে ঘুরে দাঁড়িয়ে এগিয়েও গেল তারা। এরপরই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় খেলা হয়ে গেল বন্ধ। মোহামেডান খেলতে অস্বীকৃতি জানাল। নিয়ম অনুযায়ী আধ ঘণ্টা অপেক্ষার পর আম্পায়াররা বিজয়ী ঘোষণা করলেন আবাহনীকে।
প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে শুক্রবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে মোহামেডান ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় তৈরি হয় অচলাবস্থা। শেষ পর্যন্ত তারা খেলতে না চাওয়ায় আম্পায়ারা আবাহনীকে দেন ৫-০ ব্যবধানের জয় ও ৩ পয়েন্ট।
প্রথম পর্বে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যাচটি হয়েছিল ১-১ ড্র।
এর ফলে শিরোপা নিষ্পত্তিও ঝুলে গেল। ১৫ ম্যাচে ৩৭ করে পয়েন্ট মেরিনার্স ও আবাহনীর। বাইলজ অনুযায়ী প্লে-অফে শিরোপা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। ২০১৮ সালের পর লিগের মুকুট ফিরে পাওয়ার সুযোগ হারাল মোহামেডান; অবশ্য আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করার সময় দলটির খেলোয়াড়দের দেখা গেল হাততালি দিতে, পরে টার্ফের এক কোণায় এসে পতাকা উঁচিয়ে উৎসব করতে।
ম্যাচের শুরুতে মোহামেডান ছিল না চেনা ছন্দে। তৃতীয় মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে এগিয়ে যায় আবাহনী। শিশে গাওয়ারের হিট গোলরক্ষক ফেরানোর পর পোস্টের কাছাকাছি থেকে আফফান ইউসুফে নিখুঁত হিটে লক্ষ্যভেদ করেন।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরুর দিকে পেনাল্টি কর্নারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি জানায় মোহামেডান। কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর আম্পায়ারার সিদ্ধান্ত বাতিল করলে ফের শুরু হয় খেলা। ২২তম মিনিটে শিমুল ইসলাম গোলমুখ থেকে টোকা দিতে পারেননি অপ্রস্তুত থাকায়; তাতে সমতায় ফেরা হয়নি মোহামেডানের।
তিন মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় আবাহনী। পেনাল্টি কর্নারে গাওয়ারের হিট গোলরক্ষক নুরুজ্জামান আটকালের পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সামনে থাকা পুস্কর ক্ষীসা মিমো কাজে লাগান সুযোগ।
মোহামেডান ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ্য পায় ৩২তম মিনিটে। সার্কেলের বাম দিক থেকে রিভার্স হিটে সজিবুর রহমানকে পরাস্ত করেন মালয়েশিয়ান খেলোয়াড় ফায়সাল বিন সারি।
চার মিনিট পর পেনাল্টি কর্নার থেকেই ফায়সাল বিন সারি সমতার স্বস্তি এনে দেন সাদাকালো জার্সিধারীদের। সমতার স্বস্তি পরের মিনিটেই রূপ নেয় এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে; পেনাল্টি কর্নার থেকে ফায়সাল বিন সারি হ্যাটট্রিক পূরণ করলে।
৪৩তম মিনিটে হঠাৎই মোহামেডানের সার্কেলের দুই পক্ষের উত্তেজনা তৈরি হয়। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি। বাহাসের শুরু করা আবাহনীর আফফান ও মোহামেডানের জুল বিন মিজুনকে হলুদ কার্ড দেন আম্পায়ার। মোহামেডানের দ্বীন ইসলাম ইমন ও তানভির রহমান সিয়াম এবং আবাহনীর নাঈম উদ্দিনকে দেন লাল কার্ড। এই সিদ্ধান্তের পর খেলা বন্ধ থাকে।
এক পর্যায়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মাঠ ছেড়ে ডাগআউটে অবস্থান নেয় মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা। আবাহনীর খেলোয়াড়রা ছিল মাঠের ভেতরে। ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর মোহামেডানের খেলোয়াড়রা মাঠে না ফিরলে আম্পায়ররা আবাহনীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বির ম্যাচ নির্বিঘ্ণ রাখতে প্রেসবক্সের নিচের গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল ফেডারেশন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হলো না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দেখলই হকি।