স্প্যানিশ ফুটবল
ঘরের মাঠে বছরের প্রথম ম্যাচেই দুয়ো শুনেছে রেয়াল মাদ্রিদ, পরে অবশ্য ম্যাচটি দারুণভাবে জিতে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়েছে তারা।
Published : 17 Jan 2025, 12:48 PM
ঘরের মাঠে বছরের প্রথম ম্যাচ রেয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু এই ম্যাচেই অম্ল মধুর অভিজ্ঞতা হলো দলের। গ্যালারি দফায় দফায় ভেসে এলো দুয়োর সুর। এতে অবশ্য আপত্তি নেই কার্লো আনচেলত্তির, বরং এটিকে তিনি দলের জন্য প্রেরণা হিসেবেই নিচ্ছেন। দল যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তাতেও খুশি রেয়াল মাদ্রিদ কোচ।
কোপা দেল রের ম্যাচে বৃহস্পতিবার সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে রেয়াল মাদ্রিদের শুরুটা ছিল মন্থর। সমর্থকরা এক পর্যায়ে ধৈর্য হারিয়ে দুয়ো দেওয়া শুরু করে। ৩৭তম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের গোলের পর অবশ্য চিত্র পাল্টে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভিনিসিউস জুনিয়রের গোলের পর তো আরও উল্লাসে মেতে ওঠেন সমর্থকরা।
কিন্তু ৮৩তম মিনিটে একটি গোল ফিরিয়ে দেয় সেল্তা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ে পেনাল্টি গোলে তারা সমতায় ফেরে নাটকীয়ভাবে। এবার গ্যালারি থেকে আবার ধেয়ে আসে দুয়ো।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও সেই দুয়োর সুর ভাসতে থাকে বাতাসে। একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ম্যাচ গড়াবে টাইব্রেকারে। তবে অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে এন্দ্রিকের দৃষ্টিনন্দন দুটি গোল ও বক্সের বাইরে থেকে ফেদে ভালভের্দের রকেট গতির শটে শেষ পর্যনত ৫-২ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় রেয়াল।
সমর্থকদের দুয়োর পেছনে শুধু এই ম্যাচের পারফরম্যান্সই নয়, ভূমিকা রেখেছে কদিন আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়াও। সেই ম্যাচে বাজে খেলা অহেলিয়া চুয়ামেনি এ দিন সেল্তার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি দুয়ো শুনেছেন।
আনচেলত্তি অবশ্য বরাবরই এসব ব্যাপারে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখান না। এই ম্যাচেও তিনি বললেন, সমর্থকদের দুয়ো তাদের জন্য ছিল আশীর্বাদের মতো।
“আমি এটাকে দেখছি সমর্থকদের পক্ষ থেকে দলের প্রতি ও কোচের প্রতি জেগে ওঠার ডাক হিসেবে। বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচে যা হয়েছে, এরপর এই জেগে ওঠার ডাক গ্রহণযোগ্যই। এরপর দল দারুণভাবে সাড়া দিয়েছে।”
“সমর্থকদের দুয়ো আমাদের জন্য জেগে ওঠার ডাক ছিল, কারণ যে ম্যাচটি আমরা ২-০ গোলে সহজেই জয়ের পথে ছিলাম, সেই ম্যাচটিকেই জটিল করে ফেলেছিলাম আমরা। এরপর সমর্থকরা আমাদের জাগিয়ে তোলে এবং যখন সান্তিয়াগো বের্নাবেউ এমন করে, আমাদের জন্য তা স্পেশাল। ভালো ব্যাপার হলো, অতিরিক্ত সময়ে আমরা ভালো খেলেছি এবং ম্যাচটি জিততে পেরেছি। শেষ পর্যন্ত তাই সবকিছু ভালোই হয়েছে।”
জয়ের পথে থাকা ম্যাচে শেষ দিকে দুটি গোল হজম করায় নিজেদের দায় মেনে নিচ্ছেন আনচেলত্তি। ভুল শোধরাতে অনুশীলনে জোর দেওয়ার কথা বললেন কোচ।
“শেষ দিকে আমরা দুটি ভুল করে প্রতিপক্ষকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেই। দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও আমরা ম্যাচটি উন্মুক্ত করে রেখেছি। ম্যাচ যখন প্রায় শেষ, তখন দুটি গোল উপহার দিয়েছি প্রতিপক্ষকে। প্রথম বল খেলায় থাকার পরও বাজে ভুল করেছি, পরেরটি রক্ষণে বাজে পজিশনে থাকার খেসারত। আগের ৭০ মিনিট আমরা ভালোই খেলেছি।”
“অবশ্যই ফুটবল ম্যাচে এরকম হতে পারে। এই ধরনের ভুল এড়াতে আমাদেরকে আরও অনুশীলন করতে হবে এবং ম্যাচের শেষ পর্যায়ে এরকম মন্থর হয়ে পড়া যাবে না।”