সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে বড় করে লেখা ‘এসএ গেমস-২০২৩-এ পদক উদ্ধার’। প্রেস রিলিজে লক্ষ্য হিসেবে লেখা ‘এস এ গেইমস ২০২৩-এ পদক ও গৌরব উদ্ধার করা।’ শব্দ-বাক্যের এই ভুল-ত্রুটিগুলোর সঙ্গে পরে যোগ হলো নতুন প্রশ্ন। যিনি এই সংবাদ সম্মেলন করলেন, সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা জানালেন, সেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) জি এম কামরুল ইসলাম কি আদৌও স্কোয়াশ রেকেটস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক?
Published : 10 Oct 2020, 09:06 PM
২০১৫ সালে গঠিত অ্যাডহক কমিটি দ্বারা চলছে স্কোয়াশের কার্যক্রম। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল হামিদকে অসুস্থ উল্লেখ করে গত ১ মার্চে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন ফেডারেশনের সভাপতি কর্নেল (অব) ফারুক খান। চিঠিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) কামরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করার অনুরোধ জানানো হয়।
ওই অনুরোধের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নতুন কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। কিন্তু ‘বিশ্ব স্কোয়াশ দিবস’ উপলক্ষে কামরুল শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে। স্কোয়াশের উন্নয়নে কমপ্লেক্স তৈরি, ক্লাব ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খেলাটি ছড়িয়ে দেওয়া, অব্যহৃত কোর্টগুলো পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেলও।
প্রজ্ঞাপন ছাড়া সাধারণ সম্পাদকের পদে বসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারেননি কামরুল। এক পর্যায়ে তিনি ‘ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক’ লিখতে বলেন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে।
“আপনারা একটা প্রেক্ষাপট জানেন। আমার এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হয়েছে। আগের সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ। উনি যদি অসমর্থ হন বা আরও কতগুলো কন্ডিশনে ২০ দিনের মধ্যে সভাপতি একজন সাধারণ সম্পাদক করে দিতে পারেন। তবে আমরা এই বিতর্কে যেতে চাই না। এই প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট এটা করেছেন।”
“আমরা সভাপতির চিঠি এনএসসিতে পাঠিয়েছি। আমি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করছি। ওখানে নেই যে, কমিটি থেকেই একজনকে নিতে হবে বা নিতে হবে না। ভুল ত্রুটি যদি হয়েও থাকে, আমরা এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখি। পেছনে আর ফিরে তাকাতে চাই না। এর চেয়ে বেশি উত্তর আমি দিতেও পারছি না।”
“আইন টাইন নিয়ে চললে আমরা এগুতে পারবো না। আমরা এত কষ্ট করে স্বাধীন করে দেশকে কোথায় নিয়েছি সবাই জানে। চলুন আমরা সামনের দিকে যাই। আমাকে আপনারা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লেখেন।”
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনুর। তিনিও এ ব্যাপারে দিতে পারেননি সদুত্তর।
“এখানে বিতর্ক করে সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। আমিও জানতাম না এনএসসির প্রজ্ঞাপন নেই। আমরা ফেডারেশনের সভাপতির একটা চিঠি পেয়েছি। বেসিকালি হয় কী, যেহেতু স্কোয়াশের ব্যাপার, কেউ এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। সোহেল যেহেতু সেক্রেটারি ছিল। নতুন কমিটিও যেহেতু হয়নি। যেহেতু প্রাক্তন সেক্রেটারি এখানে আছেন, সেহেতু ধরে নিতে পারি উনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন। এটা নিয়ে যদি বিতর্ক থাকে, তাহলে দ্রুত নতুন কমিটি পাশ করিয়ে নিয়ে আসা উচিত।”
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সচিব মাসুদ করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন কোনো প্রজ্ঞাপন জারি না করার কথা। স্কোয়াশের কমিটির ব্যাপারটি ‘পেন্ডিং’ থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
“আমি যতদূর জানি, স্কোয়াশে নতুন সাধারণ সম্পাদক দিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। স্কোয়াশে আমরা নতুন করে কোনো কমিটি করিনি। কে সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে, জানি না।”
“সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ বা অপরাগ হলে সেক্ষেত্রে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের তো ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার কথা।”