বার্সেলোনার ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে লাল কার্ড দেখলেন তিন জন, প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প লিখল পিএসজি।
Published : 17 Apr 2024, 03:02 AM
প্রথম লেগে জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে ফিরতি লেগে নেমে শুরুতেই এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। তবে চিত্র পাল্টে গেল দ্রুতই। প্রতিপক্ষে এক জন কম থাকার সুযোগে প্রবল চাপ বাড়াল পিএসজি। প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প লিখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠল লুইস এনরিকের দল।
কোয়ার্টার-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার মাঠে পিএসজির জয় ৪-১ গোলে।
দুই লেগ মিলিয়ে একটা পর্যায়ে ৪-২ গোলে পিছিয়ে পড়া পিএসজি শেষ পর্যন্ত ৬-৪ গোলের অগ্রগামিতায় পৌঁছে গেল পরের ধাপে।
ফিরতি লেগে রাফিনিয়া শুরুতে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেওয়ার পর ম্যাচের আধা ঘন্টার আগেই লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার রোনাল্দ আরাউহো। প্রথমার্ধেই পিএসজির হয়ে ম্যাচে সমতা টানেন উসমান দেম্বেলে। দ্বিতীয়ার্ধে ভিতিনিয়া দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর জোড়া গোল করেন কিলিয়ান এমবাপে।
আরাউহোর পাশাপাশি বার্সেলোনা কোচ শাভি এর্নান্দেস এবং তাদের সাপোর্ট স্টাফের আরও এক সদস্য লাল কার্ড দেখেন এই ম্যাচে।
প্রথম লেগে পিএসজির মাঠে ৩-২ গোলে জিতেছিল কাতালান দলটি।
এই হারে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার ১৩ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রায়ও ছেদ পড়ল।
পাঁচ মৌসুমের মধ্যে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে খেলার লক্ষ্যে দ্বাদশ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। লামিনে ইয়ামাল ডান দিক দিয়ে প্রতিপক্ষের একজনের বাধা এড়িয়ে বক্সে ঢুকে কাট-ব্যাক করেন আর কাছ থেকে ভলিতে জাল খুঁজে নেন রাফিনিয়া।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার ৬০০তম গোল এটি।
দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৪-২ গোলে এগিয়ে লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা।
২৮তম মিনিটে দারুণ সেভে ব্যবধান ধরে রাখেন মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। বক্সের ভেতর থেকে এমবাপের ডান পায়ের নিচু শট ফিরিয়ে দেন জার্মান গোলরক্ষক।
পরের মিনিটেই বার্সেলোনার লাল কার্ডের ধাক্কা। বক্সের বাইরে বিপজ্জনক জায়গায় পিএসজির বারকোলাকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আরাউহো।
মিনিট পাঁচেক পর রক্ষণে শক্তি বাড়াতে তরুণ ফরোয়ার্ড ইয়ামালকে তুলে ডিফেন্ডার ইনিগো মার্তিনেসকে নামান বার্সেলোনা কোচ শাভি।
প্রতিপক্ষে এক জন কম থাকার সুযোগে চাপ বাড়ায় পিএসজি। ৪০তম মিনিটে তাদের ম্যাচে ফেরান দেম্বেলে। বাঁ দিক থেকে বারকোলার বাড়ানো বলে দূরের পোস্টে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। বিরতির আগে তার আরেকটি প্রচেষ্টা পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
চাপ ধরে রেখে ৫৪তম মিনিটে আবার বার্সেলোনার জালে বল পাঠায় পিএসজি। বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে গোলটি করেন ভিতিনিয়া।
দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৪-৪ সমতা।
পরের মিনিটে অল্পের জন্য গোল পায়নি বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইলকাই গিনদোয়ানের শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে।
একটু পরই রেফারির একটি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে টাচলাইনে থাকা পানির বোতলে লাথি মারেন শাভি, কিছু একটা বলতে থাকেন রেফারিকে। বার্সেলোনা কোচকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
৬১তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে স্কোরলাইন ৩-১ করেন এমবাপে। জোয়াও কানসেলো বক্সে দেম্বেলেকে ফাউল করায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৫-৪ গোলে এগিয়ে যায় পিএসজি।
দুই মিনিট পর প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে বক্সে পড়ে যাওয়ার পর পেনাল্টির আবেদন করেন গিনদোয়ান, তবে রেফারির সাড়া মেলেনি, বরং রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন জার্মান মিডফিল্ডার। একই সঙ্গে ডাগআউটে বার্সেলোনার এক সাপোর্ট স্টাফ দেখেন লাল কার্ড।
ম্যাচের বেশিরভাগ সময় নিষ্প্রভ থাকা রবের্ত লেভানদোভস্কি ৭৩তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন। বক্সের বাইরে থেকে পোলিশ তারকার বাঁ পায়ের নিচু শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
৮৯তম মিনিটে ডাবল সেভ করেন টের স্টেগেন। মার্কো আসেন্সিওর শট ঠেকানোর পর এমবাপের প্রচেষ্টাও রুখে দেন তিনি। তবে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি বার্সেলোনার ডিফেন্ডাররা। কাছ থেকে শটে ম্যাচের শেষ গোল করেন এমবাপে।
সেমি-ফাইনালে পিএসজির প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। দুই লেগ মিলিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে শেষ চারের টিকেট পেয়েছে জার্মান দলটি।